কলকাতার বুকে মেট্রো পরিষেবাকে অনেকে অনেক সময় শহরের হৃদস্পন্দন বলে এসেছেন। কারণ মহানগরীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে নির্দ্বিধায় কোনোরূপ ট্র্যাফিক জ্যাম ছাড়াই যাত্রীদের পৌঁছে দেয় এই পাতালরেল। ১৯৮৪ সালে চালু হওয়া এই পরিষেবা এখনো এক প্রাচীন ও আধুনিকতার ঐতিহ্য প্রদান করে তিলোত্তমা নগরীকে। বিগত দশকে শহরের একাধিক রুটে মেট্রো চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে ব্যস্ততম শহর কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসতে চলেছে আমূল পরিবর্তন।
তবে সবকটি প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম হল গঙ্গার নীচ দিয়ে ট্রেন চালানো অর্থাৎ ‘ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো’। দেশের সবথেকে গভীরতম হাওড়া স্টেশন থেকে এসপ্ল্যানেড যাবে এই মেট্রো। যার মধ্যে ৫০০ মিটারের বেশি রাস্তা পারাপার হবে গঙ্গার নীচে। নীল আলোয় সাজানো হয়েছে গঙ্গার নীচে অবস্থিত টানেলের অংশে। বুধবার এই মেট্রো রুটের উদ্বোধন করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে তিনিও এই রুটে প্রথম মানুষ হিসেবে এমন এক মেট্রোতে চড়লেন, যা মাটির নীচে গঙ্গা পারাপার করলো। এই দিনটিকে সেই কারণে ঐতিহাসিক বলে তকমা দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় শাসক দলের কর্মী থেকে সমর্থক সকলেই।
কিন্তু ঢাক ঢোল পিটিয়ে মেট্রো রুটের উদ্বোধন হলেও এক্ষুনি যাত্রীদের নিয়ে মেট্রো ছুটবে না এই লাইনে। তবে রাজ্যবাসী তাকিয়ে সেই দিনটির দিকে, যেদিন গঙ্গাকে ভেদ করে তার বুক চিরে ছুটে যাবে ট্রেন। কিন্তু এই বিষয়ে এখনো কোনো আপডেটই দিতে পারেনি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যদিও বুধবার উদ্বোধনের পরেই ভিড় জমতে শুরু করে হাওড়া ও এসপ্ল্যানেড স্টেশনের কাছে। অনেকেই ভেবেছিলেন যে উদ্বোধনের পরেই হয়তো খুলে যাবে মেট্রোর দরজা। তবে বুধবার মাঝরাত অবধি মেট্রো চলাচল শুরু নিয়ে কোনো আপডেট দিতে পারেন নি মেট্রোরেলের আধিকারিকরা।
এদিকে যাত্রীদের মধ্যে এই মেট্রো রুটকে নিয়ে আশা জাগছে। তাই উদ্বোধনের দিন একজন বলেন, “এখন অপেক্ষায় আছি কতক্ষণে গঙ্গার নীচ দিয়ে ট্রেনে চেপে যাব। মনে মনে রোমাঞ্চ হচ্ছে। উদ্বোধন তো হয়ে গেল, এখন আমাদের জন্য এই পরিষেবা চালু হলেই হয়।” অন্য আরেকজনের মতে, “এসি বাসের চেয়ে তো মেট্রোর ভাড়া কম। তা ছাড়া রাতের দিকে কলকাতা থেকে হাওড়া ফেরাও সমস্যার। ভালোই হবে আমাদের জন্য”। তবে কর্মী ও নিরাপত্তার ব্যবস্থার ঘাটতি থাকার কারণেই এক্ষুনি এই রুটে মেট্রো চলাচল শুরু হবেনা বলে জানা গেছে।