বর্তমান সময়ে ভারতীয় রেল আমাদের দেশের গণপরিবহণ ব্যবস্থায় এক অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ রেল নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে ভারতের বুকেই। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত এই বিশাল সিস্টেম। প্রায় প্রতিদিনই দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনের মাধ্যমে পৌঁছে যান নির্দিষ্ট গন্তব্যে। যাত্রী পরিবহন থেকে শুরু করে দৈর্ঘতার নিরিখে ভারতীয় রেল বিশ্বে চতুর্থ স্থান দখল করে। সুদূর জম্মু থেকে কন্যাককুমারী, আসাম থেকে রাজস্থান- সর্বত্র বিছিয়ে রয়েছে রেলের যোগাযোগ। আর এই বিশাল দেশে রেল ব্যবস্থা চালু রয়েছে বছরের সবকটি দিনই।
আর বাংলায় যে রেলপথ রয়েছে তার মধ্যে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের অন্তর্গত বিষ্ণুপুর হল একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। কারণ এই স্থানটি বাংলার পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম। কারণ বিষ্ণুপুর থেকে সামনেই রয়েছে জয়রামবাটি, যেখানে মা সারদার জন্ম হয়। এছাড়াও হুগলি জেলায় রয়েছে রামকৃষ্ণদেবের জন্মস্থান কামারপুকুর ও তারকেশ্বর। তবে বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি বা কামারপুকুর বা তারকেশ্বর যাওয়ার জন্য একমাত্র সড়কপথ উপলব্ধ। আর সড়কপথে অনেকটা সময় বেশি খরচ হয়ে যায়। সেই কারণেই বিষ্ণুপুর ও তারকেশ্বর রেলপথ চালুর দাবি উঠে আসছে অনেকদিন ধরেই। তবে এখনো এই রুটে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কিছু জট রয়ে গেছে। সেই বিষয়টিকে তাড়াতাড়ি সমাধান করে রেল শীঘ্রই এই রেল রুট চালু করতে পারে বলে খবর।
এই রেল রুটের কাজ শুরু হয় ২০০১ সালে। তারপর একদিকে তারকেশ্বর থেকে গোঘাট পর্যন্ত ৩৪ কিমি ধ্বং বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিমি রুটের কাজ শেষ হয়েছে। এই দুই অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে মাঝখানের কিছুটা অংশের কাজ জমি জটের কারণে আটকে যায়। তবে সেই কাজ আবার শুরু করেছে রেল। রেল সূত্রে জানা গেছে, ময়নাপুর থেকে বড় গোপীনাথপুর পর্যন্ত ৭.৭ কিমি অংশে মাটি খনন থেকে সেতু নির্মাণ, সবটাই শেষের মুখে। এদিকে বড় গোপীনাথপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত ৭.১ কিমি অংশেও কাজ প্রায় শেষের মুখে। চলছে বড় গোপীনাথপুর ও জয়রামবাটি স্টেশন ভবন নির্মাণের কাজও।
প্রসঙ্গত, এই রেল রুটে জমি নিয়ে সমস্যা এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি। দুই দিকে কাজ শুরু হলেও এখনো কিছু সমস্যা রয়েই গেছে। এই সমস্যা বেশি ছিল জয়রামবাটি ও কামারপুকুরের মাঝে। সেখানে প্রায় ২.৫ কিমি রেল লাইনের কাজ শেষই হচ্ছিল না। তবে গত ৮ ই মার্চ এই অংশে সমস্যা মিটেছে বলে জানিয়েছে রেল। তবে এখনো কামারপুকুর থেকে গোঘাট পর্যন্ত ৫.৫ কিমি লাইন নির্মাণে জমি সমস্যা রয়ে গেছে। জানা গেছে রি অংশের মাত্র ৯০০ মিটার জমি নিয়ে বাড়ছে সমস্যা। তবে সবটা মিটিয়ে ২০২৫ নাগাদ এই রুটে ট্রেন চালানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রেল।