মালাবদল, সিঁদুরদান, তারপর একসাথে সংসার পাতা। এমন গল্প তো আপনি পাবেন সব বাড়িতেই। কারণ সব বাড়িতেই এমন রীতি মেনে বিয়ে দেওয়া হয় পুরুষ ও নারীর। কিন্তু বিয়ে খানিকটা আলাদা।কারণ গল্পটা পুরুষ ও মহিলার নয়, গল্পটা দুই পুরুষের। এই দুই পুরুষের গল্পটা একটু অন্যরকম। কারণ আর কিছুই না, দুজনেই পুরুষ, সর্বোপরি দুজনেই সমকামী। কিন্তু তাতে কি! আজ তো ভালোবাসার মাঝখানে নেই কোনো বাধাবিপত্তি কিংবা দেওয়াল। তাই হয়তো এই দুই পুরুষের প্রেমও আজ পেয়েছে পরিণতি। কিন্তু কিভাবে সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করলেন তারা? দেখুন এই প্রতিবেদনে।
এমন ঘটনা আজকাল সব জায়গাতেই মোটামুটি শোনা যায়। আর এবার শেষ শীতে এমন ঘটনা ঘটল বীরভূম জেলায়। লালমাটির দেশ বীরভূমের সিউড়ির করিধ্যার সেনপাড়ায় হল এই ব্যতিক্রমী বিয়েবাড়ি। এই বিয়ের পাত্র হলেন এই এলাকার বাসিন্দা বাসুদেব চক্রবর্তী। তবে এলাকায় তিনি বাসু নামেই পরিচিত। এই যুবক শৈশব থেকেই আর পাঁচজনের থেকে আলাদা। কারণ শোনা যাচ্ছে, ছোট থেকেই নাকি শার্ট প্যান্টের বদলে শাড়ি, চুরিদারের মতো মহিলা পোশাকে তার ভক্তি ছিল বেশি। এইসব পোশাক পরতেও তিনি ভালোবাসতেন। কিন্তু তাই বলে যে একদিন এক পুরুষকে ভালোবেসে তার সাথে ঘর বাঁধার পদক্ষেপ নিয়ে বসবে, তা কেউ জানতো না।
বুধবার রাতে বসে এই বিয়ের আসর। তবে এই বিয়েতে ভার্চুয়ালি হাজির ছিলেন বাসুর পরিবার পরিজনেরাও। জানা যায়, ভিডিও কলের মাধ্যমে তাদের সাক্ষী রেখেই সম্পন্ন হয় এই বিয়ে। জানা যায়, বীরভূমের বাসুর সঙ্গে পরিণয় ঘটে হাওড়ার বাসিন্দা অমিত মালিক। যদিও অনেকেই এমন বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। সেই কারণেই তাদের এই কাণ্ডে স্তম্ভিত দুই বাড়ির আত্মীয় থেকে প্রতিবেশীরা। তবে ছোট থেকেই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল বাসুর। তাই তারাই চাঁদা তুলে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেন। সর্বোপরি এই বিয়েতে শামিল হন তারা।
তবে এই বাসু আগে পরিবারের চাপে বিয়ে করেন এক যুবতীকে। কিন্তু তাদের সম্পর্ক টেকেনি বেশিদিন। ভালোবাসার অভাবেই ভেঙে যায় তাদের সম্পর্ক। এই বিষয়ে বাসুর এক আত্মীয় বলেন, “২০১২ সালে রামপুরহাটের একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বাসুর। কিন্তু বিয়ে হওয়ার এক বছরের মধ্যে ও বিবাহবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তী সময় ওই মেয়েটিও আর এক জনকে বিয়ে করে। আর এ বার বাসু বিয়ে করল অমিতকে”। এদিকে বাসুর এক প্রতিবেশী বলেন, “ছোট থেকেই বাসুদেব পাড়ার আর দশটা ছেলের মত জামাপ্যান্ট পড়তে ভালবাসতো না। পড়তে ভালোবাসতো শাড়ি, চুরিদার ও মেয়েদের পোশাক এবং অলংকার।”