বিগত কয়েক মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি যেন গোটা দেশে এক চরম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। মশলাপাতি থেকে সবজি, মাছ-মাংস, চাল ও ডাল- সবকিছুর দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বলা বাহুল্য, খুব অল্প সময়ে বেশি হারে ঘটেছে এই মূল্যবৃদ্ধি। বসন্তের শুরুতেই কার্যত এভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ছবিটা ধরা পড়েছে আমাদের রাজ্যেও। পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যে বিভিন্ন সামগ্রীর পরিবহনে পড়ছে, তা মোটামুটি পরিষ্কার হয়েছিল নাগরিকদের কাছে। একইসঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে দিনের পর দিন। আর এই সবকিছু মিলিয়ে যেন খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল মধ্যবিত্তদের কাছে।
মাসখানেক আগে টমেটো, কাঁচালঙ্কা, রসুন ও আদার দাম বেড়ে গিয়েছিল আচমকা। সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিল এই জিনিসগুলি। তবে সেগুলির দাম এখন কিছুটা কমে এলেও এখন আবার চোখ রাঙাচ্ছে চিকেন ও মাটন। কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলার বাজারে এখন আগুন দামে বিক্রি হচ্ছে মাংস। আর মাংসের মধ্যে সবথেকে বেশি বিক্রি হয় চিকেন, যার দামও লেগেছে আগুন। পাশাপাশি খাসি ও পাঁঠার মাংসের দামেও দেখা যাচ্ছে ঊর্ধ্বগতি। ফলস্বরূপ অনেক ক্রেতা বাজার থেকে ফিরে আসছেন খালি ব্যাগ হাতে নিয়ে।
গত রবিবার কলকাতার ব্যভিন্ন বাজারের মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ২৫০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে। এই দাম বেড়েছে সপ্তাহ চলাকালীন। শুক্রবারের বাজারদর দেখলে, কলকাতার বিভিন্ন বাজারে চিকেনের দাম রয়েছে কেজিপ্রতি ২৮০ টাকা। অথচ মাসখানেক আগেই কেজিপ্রতি ২০০ টাকার আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল এই দাম। কোথাও কোথাও আবার ২০০ টাকার কমেও পাওয়া যাচ্ছিল চিকেন। তবে সেসব এখন অতীত। কারণ এখন এক কেজি চিকেন কিনতে প্রায় ৩০০ টাকা খরচ কেটে হচ্ছে ক্রেতাদের।
কিন্তু কেন আচমকা এই মূল্যবৃদ্ধি? এমনিতে গ্রীষ্মে চিকেনের দাম কমলেও এবছর উল্টো ছবি কেন? এই বিষয়ে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে একটি বিষয়। আর সেটি হল মুরগির খাবারের দাম। বিগত কয়েকমাসে মুরগির খাবারের দামের দিকে নজর দিলে সেখানেও পরিবর্তনটা লক্ষ্যনীয়। একইসঙ্গে দাম বেড়েছে ভুট্টা ও অন্যান্য শস্যদানার। এছাড়াও ইথানলের দামও বেড়ে গিয়েছে ব্যাপকভাবে। আর এই কারণেই অগ্নিমূল্য হয়েছে মুরগির খাবার। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিকেনের দামও।