সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে ভারত ২৮টি রাজ্য ও ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বিশিষ্ট একটি সংসদীয় সাধারণতন্ত্র। ভারতীয় অর্থব্যবস্থা বাজারি বিনিময় হারের বিচারে বিশ্বে দ্বাদশ ও ক্রয়ক্ষমতা সমতার বিচারে বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম। সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারত একটি বহুধর্মীয়, বহুভাষিক ও বহুজাতিক রাষ্ট্র। আবার বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের নানা বৈচিত্র্যও এদেশে পরিলক্ষিত হয়।
ভারতের নানা রাজ্যে মানুষের জনজীবনের মধ্যে রয়েছে একাধিক বৈচিত্র। সেরকমই সংস্কৃতির বৈচিত্র্য দেখা যায় দেশে। যাবার দেশের নানা স্থানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্রের কথা তো কারো অজানা নয়। তাই জম্মু ও কাশ্মীরে যে সময় বরফ দেখা যায়, সেখানে বাদবাকি রাজ্যে একই সময়ে গ্রীষ্মের দাপট চলে। তবে শুধুমাত্র ভারতবর্ষ বললে ভুল হবে, পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় রয়েছে প্রাকৃতিক বৈচিত্র। যেমন এখন উত্তরবঙ্গের মনোরম পরিবেশ থাকলেও দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় বাড়ছে শেষ বসন্তের অস্বস্তি।
তবে এই সময়টায় পুরুলিয়ার সৌন্দর্য যেন অন্য মাত্রা পায়। কারণ পুরুলিয়া হল শাল ও পলাশের ভূমি। তাই বসন্তে পলাশের রঙে রাঙা হয়ে যায় পুরুলিয়ার অধিকাংশ অংশ। তবে পলাশ ফুলের রং সাধারণত কমলা বা গাঢ় হলুদ রংয়ের হয়ে থাকে। তবে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিরল শ্বেত পলাশের গাছ। এই পলাশ গাছে ফুলের রং হয় সাদা রঙের। সর্বসাকুল্যে গোটা পুরুলিয়া জেলায় এই শ্বেত পলাশের গাছ রয়েছে ২৫ টি’র কাছাকাছি। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে এই বিরল পলাশের গাছ রয়েছে হুড়া, পুঞ্চা, বান্দোয়ান, বলরামপুর, বাঘমুন্ডি, রঘুনাথপুর ও অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন এলাকায়।
যদিও জানা গেছে, কয়েকবছর আগে পুরুলিয়া জেলায় হুড়া এলাকায় প্রথম এই গাছ দেখা যায়। তবে শুরুতে বিষয়টি তেমন প্রচার পায়নি। তবে গত বছর পুরুলিয়া শহরের জেলা স্কুল মোড় এলাকার বাসিন্দা আড়শা ব্লকের ভ্রমরটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক প্রথম এই শ্বেত পলাশের বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। তারপর থেকেই রটে যায় যায় যে এই গাছটি ৮০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তারপর হইচই পড়ে যায় এই গাছকে নিয়ে। যদিও পরে প্রশাসন বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে পুরুলিয়া লের আকর্ষণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এই বিরল শ্বেত পলাশ।