বাঙালি যেমন ভোজনরসিক, তেমনই আবার ভ্রমণপিপাসু। ভ্রমণে এলার্জি রয়েছে এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই গরমের ছুটি হোক বা শীতের উইকেন্ড কিংবা পুজোর লম্বা ছুটি- দেশবিদেশ থেকে সফর সেরে নেওয়ার প্ল্যান করেন উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সকলেই। আর এই শেষ শীতে সমুদ্রের নোনতা বাতাস গায়ে মাখতে কে না চায়। বর্তমানে বাঙালির কাছেপিঠের একমাত্র গন্তব্য হল দীঘা। দু’দিনের ছুটি কাটানো হোক বা ঝাউবনের মৃদুমন্দ হিমেল বাতাসের মাঝে বনভোজন, বাংলার বুকে দীঘার জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু দীঘায় যে পরিমানে পর্যটকের ভিড়, তাতে অনেকে দীঘা এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করেন।
কিন্তু দীঘা না গেলে সমুদ্রপ্রেমীরা ঘুরতে যাবেন কোথায়! এটাও এখন একটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। কারণ আজকাল সকলের জীবনে রয়েছে ব্যস্ততা। আর এই ব্যস্ত জীবনে চাকরি বা পড়াশুনা বা ব্যবসা থেকে লম্বা ছুটি নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ বছরে একবারই আসে। কিন্তু এই রোজকার জীবনে হাঁপিয়ে ওঠেন অনেকেই। তাই এই জীবন থেকে ‘এসকেপ রুট’-এর সন্ধানে কাছেপিঠের গন্তব্য খুঁজে থাকেন অনেকেই। কিন্তু এই শর্ট ট্যুর ডেস্টিনেশন থেকে দীঘাকে বাদ দিলে আর কোথায় যাওয়া যায়! আপনার মনেও এমন প্রশ্ন থাকলে তার উত্তর রইল এই প্রতিবেদনে।
বাঙালির কাছেপিঠেই রয়েছে এমন এক অপরূপ সুন্দর স্থান, যেখানে মিলন ঘটেছে তিনটি নদীর। অর্থাৎ এই স্থানটি তিন নদীর সঙ্গমস্থল। তাই এই বসন্তের বিকেলে কয়েকঘন্টা ঘোরাফেরার জন্য এই স্থানটি দারুন একটি বিকল্প হতে চলেছে। এই স্থানটি রয়েছে ডায়মন্ডহারবারের নূরপুরে। যেখওনে যেমন আপনি নদীর পাড়ের অপরূপ সুন্দর সূর্যাস্ত দেখতে পারবেন, তেমনই আবার নদীর বুকে নৌকাবিহার করতেও পারবেন। নির্জন এই স্থানে আপনাকে খুব কাছ থেকে ধরা দেবে প্রকৃতি। তাই এখানে বিশাল জলরাশির সন্নিকটে বসে মৃদুমন্দ বাতাস গায়ে লাগিয়ে গল্প করাই যায়।
এবার জেনে নিন যে কিভাবে এই সুন্দর স্থানটিতে পৌঁছাবেন। এর জন্য শিয়ালদহ থেকে আপনাকে ডায়মন্ডহারবারের ট্রেন ধরতে হবে। ডায়মন্ডহারবার স্টেশনে নেমে সেখান থেকে হেঁটে পৌঁছানো যাবে এই নূরপুরে। আমতলা ও শিরাকোল পেরোলেই এই স্থানটি পেয়ে যাবেন। এখান থেকে নৌকাবিহার করে আপনি যেতে পারবেন গেঁওখালি আর গাদিয়াড়াতে। এই যাত্রায় আপনি দেখতে পাবেন হুগলি, দামোদর ও রূপনারায়ণের ত্রিবেণী সঙ্গম। এখানে নৌকা আগের থেকে বুকিং করতে হয়না। তাই এই স্থানে পৌঁছে গিয়েই ককরে ফেলুন দারুন পরিকল্পনা। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হয়ে ফিরবেন না।