উইকেন্ডের দু’দিনের ছোট্ট ট্যুর হোক বা বিশেষ কোনো মুহূর্তের উদযাপন, বাঙালির কাছেপিঠের গন্তব্য হয় একটাই। আর সেটা হল দীঘা। অনেকে আবার শীতকালে ঝাউবনের মৃদু বাতাসে উনুন জ্বালিয়ে বনভোজন করতেও বেছে নেন দীঘাকে। আবার অনেকেই রয়েছেন ভোজনরসিক, যারা সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়ার রসনাতৃপ্তির উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন বাংলার এই সমুদ্র সৈকতে। তবে উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, দীঘা সমুদ্র সৈকত বাঙালির মনে যেন একটা আলাদা জায়গা পায়।
দীঘায় রয়েছে শান্ত সমুদ্রের নাতিশীতোষ্ণ নোনা বাতাসের সরগম। এই সমুদ্র সৈকতের ফাঁকা বালিয়াড়িতে বসে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত বেশ নয়নাভিরাম দৃশ্য। তেমনই সেই সমুদ্র সৈকতে রয়েছে মৎস্যলালসা নিবারণের উপায়। দীঘার বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি জুড়ে রয়েছে বহু সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়ার খুচরো স্টল। যে স্টলে গেলেই খুব কম দামে উদরাভিরাম হয় বাঙালির। তবে এবার বাঙালির এই সমুদ্র দর্শনের অভিজ্ঞতাকে আরো বেশি চমকপ্রদ করে তুলতে বিশেষভাবে আগ্রহী হয়েছে ভারতীয় রেল। তাই এবার নেওয়া হয়েছে এক বড় পদক্ষেপ।
এতদিন অবধি কলকাতা থেকে দীঘা যাওয়ার গণপরিবহন মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ছিল ট্রেন ও বাস। তবে রাতের বেলায় দীঘা যাওয়ার কোনো ট্রেন নেই। কাজেই কেউ যদি ভাবেন যে অফিসের কাজ সেরে রাতে ট্রেনে চড়ে বসবেন, আর সকাল হওয়ার আগেই পৌঁছে কবে সমুদ্রের ধারে, তাহলে সেটি সম্ভবপর ছিল না। কারণ, দীঘা যাওয়ার জন্য রাতে কোনো ট্রেনই ছিল না। তাই কেউ রাতের সফর করতে চাইলে তাকে বাসের উপর ভরসা করতে হত। যদিও সুরক্ষার দিক থেকে অনেকেই বাসকে তেমন পছন্দ করেন না।
তবে এবার সবার সমস্যার সমাধান হবে। জানা গেছে, শীঘ্রই রাতে দীঘা যাওয়ার একটি ট্রেন চালু হবে। আর এই ট্রেনটি হাওড়া থেকে নয়, সাঁতরাগাছি জংশন থেকে ছাড়বে। তবে সপ্তাহের সব দিন মিলবে না এই ট্রেন। শুধুমাত্র শনিবার ও রবিবার চলে এই ট্রেন। এই ট্রেন যাত্রাপথে স্টপেজ দেয় উলুবেড়িয়া, বাগনান, মেচেদা, তমলুক, দেশপ্রাণ ও কাঁথিতে। রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে এই ট্রেনটি ছাড়বে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে এবং সেটি দীঘা পৌঁছাবে ভোর ৩.৩০-এর সময়। এছাড়াও এই ট্রেন সকাল আটটায় আবার দীঘা থেকে ছেড়ে বেলা ১২.১০-এ এসে পৌঁছায় সাঁতরাগাছি স্টেশনে।