বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক জনবহুল দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে ভারত। তাই ভারতে নিত্যদিন মানুষের যাতায়াত করতে হয় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে। আর বর্তমান সময়ে ভারতীয় রেল আমাদের দেশের গণপরিবহণ ব্যবস্থায় এক অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রায় প্রতিদিনই দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনের মাধ্যমে পৌঁছে যান নির্দিষ্ট গন্তব্যে। ট্রেনে সফর করে কেউ যান কাজে, কেউ ভ্রমণে, কেউ আবার অন্যান্য দরকারে। সেই কারণে ভারতের রেল নেটওয়ার্ক অন্যতম ব্যস্ত একটি ব্যবস্থা। যাত্রী পরিবহন থেকে শুরু করে দৈর্ঘতার নিরিখে ভারতীয় রেল বিশ্বে চতুর্থ স্থান দখল করে।
ট্রেনের উন্নতিকরণের পাশাপাশি ভারতীয় রেল এবার দেশের অনেক স্টেশনকে নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে তুলছে। আমাদের রাজ্যেও বেশ কিছু স্টেশনে কাজ শেষের মুখে। আর এবার বঙ্গবাসীর জন্য দারুন সুখবর রয়েছে রেলের পক্ষ থেকে। কারণ এবার উত্তরবঙ্গের রেল রুটে জুড়তে চলেছে নতুন পালক। দীর্ঘ দুই দশকের টালবাহানা শেষে খুলতে চলেছে নশিপুর রেল ব্রিজ। জানা গেছে মুর্শিদাবাদ জেলার এই ব্রিজ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের মুখে। ৩১৩ মিটার লম্বা এই ব্রিজ খুলে যাবে শীঘ্রই। আর এই ব্রিজ খুলে গেলে ভাগীরথী নদীর ওপর দিয়ে দাপিয়ে ছুটবে দূরপাল্লার ট্রেন।
এই সেতু শুধুমাত্র নদী পারাপার নয়, দুটি করিডোরকেও জুড়ে দেবে। নশিপুর রেল সেতু মুর্শিদাবাদ এবং আজিমগঞ্জ জংশনের সংযোগস্থল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। এছাড়াও এই রেল ব্রিজ নির্মাণের ফলে দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার রেলপথ অনেকটাই কমছে। কারণ এর আগে শিয়ালদহ বা অন্য কোনো দক্ষিণবঙ্গের রেল স্টেশন থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে যেতে যাত্রীদের সফর করতে হত ৫৬৭ থেকে ৫৭৪ কিমি রেলপথ। তবে এবার থেকে মাত্র ৫৫৩ কিমি পথ পেরোলেই পৌঁছানো যাবে এনজেপি স্টেশনে। এর ফলে উপকৃত হবেন রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ।
প্রসঙ্গত, ইউপিএ সরকারের আমলে রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব এই সেতুর শিল্যান্যাস করেন। সালটা ছিল ২০০৪। দিনটা ছিল ৩০ শে ডিসেম্বর। রেল মন্ত্রকের সিদ্ধান্তে খুশি ছিল মুর্শিদাবাদবাসীও। তারপর ২০০৬ সালে শুরু হয় সেতু নির্মাণের কাজ। ২০১০ সাল নাগাদ সেতু নির্মাণের কাজ শেষও হয়ে যায়। কিন্তু তারপরেই জমি নিয়ে শুরু হয় সমস্যা। এদিকে সেতু নির্মাণের কাজের শেষ আর হয়নি। কিন্তু তারপর কাজ আবার শুরু হয়। শোনা যাচ্ছে, চলতি বছরের মার্চেই এই সেতু দিয়ে ট্রেন ছুটতে চলেছে।