গঙ্গাসাগর হল হিন্দু ধর্মের এক পবিত্র স্থান সাগর সঙ্গমের এই স্থানে রয়েছে কপিল মুনির আশ্রম। এখানেই মকর সংক্রান্তির পুণ্যলগ্নে মেলা হয়। লাখ লাখ পুণ্যার্থীদের ভিড় জমে এই মেলায়। এই বিপুল ভিড় সামাল দিতে প্রতি বছর মেলার আগে থেকেই তাদের নিরাপত্তা ও পরিবহন ব্যবস্থা সুচারু করে তুলতে নানা পদক্ষেপ নেয় সরকার। কিন্তু এই মেলায় পৌঁছানোর জন্য প্রধান যে সমস্যা, তা হল মুড়িগঙ্গা নদী পারাপার। এই বছরই মেলার সময় মুড়িগঙ্গা নদীতে ভেসেল আটকে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসে। এই ঘটনায় যাত্রীদের প্রবল দুর্ভোগের ঘটনা সবার সামনে এসেছিল খবরে।
একইসঙ্গে এই সাগর এলাকার মানুষের কাছেও এটি একটি জ্বলন্ত সমস্যা। মেলার সময় এসব নিয়ে খবর হলেও অন্যান্য সময় এই সমস্যার কথা পৌঁছায় না সরকারের কানেও। বলা যায়, সাগরদ্বীপ রলাকে এটি একটি নিত্য সমস্যা। এভাবেই দিনযাপন করতে হয় সুন্দরবনের মানুষদের। তবে এবার এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন লাখ লাখ মানুষ। কারণ এবার রাজ্য সরকার মুড়িগঙ্গা নদীর উপর কংক্রিটের ব্রিজ নির্মাণ করতে চলেছে। ফলে যেমন উপকৃত হতে চলেছেন পুণ্যার্থীরা, একইভাবে সরকারের এই পদক্ষেপে বিরাট সুবিধা পাবেন সাগরদ্বীপ এলাকার মানুষও।
চলতি বছর রাজ্য বাজেটে এই সেতু নির্মাণের ঘোষণা করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। জানা গেছে, ৩ কিলোমিটারের বেশি লম্বা ব্রিজ নির্মাণ হবে। আর এই মর্মে রাজ্য বাজেটে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বাজেট ঘোষণার সময় এই বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে তৈরি হতে চলেছে ৩.১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু যা লট নম্বর আট থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করবে। সেতুর নাম দেওয়া হয়েছে গঙ্গাসাগর সেতু। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে সময় লাগবে তিন বছর। যার জন্য ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রথম বছর রাজ্য সরকার দেবে দুশো কোটি টাকা।”
এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানান, “২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়ে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আশ্বাস দিলেও অর্থ সাহায্য করেনি কেন্দ্র। তাই সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের পাশাপাশি গঙ্গাসাগরে আসা তীর্থযাত্রীদের সমস্যার কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী এই সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খুব শীঘ্রই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে রাজ্য বাজেটে সেতু নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।”