শিক্ষা হল জাতির মেরুদন্ড। তাই শিক্ষা যেমন সকলের অধিকার, তেমনই সকলের কাছে আবশ্যক একটি বিষয়। তাই ছাত্রছাত্রীরা হল দেশের ভবিষ্যৎ। দেশের শিল্প থেকে প্রযুক্তি, বিজ্ঞান থেকে গবেষণা, সবকিছুর আগামীর পথ তৈরি হয় পড়ুয়াদের মাধ্যমেই। তবুও এখনো আমাদের দেশের অনেক জায়গাতেই শিক্ষার আলোটুকু পৌঁছায় নি। কোথাও আবার শিক্ষার আলো পৌঁছালেও প্রবেশ করেনি উন্নত প্রযুক্তি ও পদ্ধতি। আর সেই কারণে রাজ্যের এমন সব এলাকাতেও শিক্ষার সবটুকু সুবিধা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার।
আর সেই শিক্ষার প্রধান আলয় হল স্কুল। স্কুলকে শিক্ষার মন্দির বলে থাকেন অনেকেই। তাই শিশুর জন্মের পর তাকে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার পাশাপাশি থাকে সঠিক সময়ে স্কুলে পাঠানো অভিভাবকদের একান্ত কর্তব্য। তাই শিশুর কথা ফুটলেই এখন তাকে স্কুলে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। তবে বাচ্চারা যে সরকারি স্কুলে যাচ্ছে, সেখানের অবস্থাই রীতিমতো শোচনীয়। নানারকম অব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের অনুপস্থিতির পাশাপাশি ক্লাসের মধ্যে তাদের মোবাইল ঘাঁটা, সবটাই চূড়ান্ত অনিয়ম স্কুলে স্কুলে। তবে এবার স্কুকের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের জন্য কঠিন নিয়ম জারি হল।
আসলে, বহুদিন আগে থেকেই স্কুলে ক্লাসের মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পর্ষদ। তবে তা যে শুধুই নিয়ম, তা সম্প্রতি চোখে পড়ে হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। তিনি জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে যাওয়ার পথে আচমকা ফণীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউশন স্কুলে পরিদর্শনে যান। আর সেখানে গিয়েই তার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। কারণ স্কুলের ৪৫ শিক্ষক ও শিক্ষিকার মধ্যে সেদিন ১২ জন ছিলেন অনুপস্থিত। মিড-ডে মিলের ভাত গড়াগড়ি খাচ্ছিল ড্রেনে। ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার করছিলেন অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা। এককথায় স্কুলের প্রতিটি নিয়মের উলঙ্ঘন চোখে পড়ে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর।
এরপরই শিক্ষা দফতর নড়েচড়ে বসে। স্কুলে স্কুলে নির্দেশিকার চিঠি পাঠানো হয়। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে স্কুলের মকধ্যে বসে মোবাইল ঘাঁটতে পারবেন না শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। এছাড়াও, ছুটি নেওয়ার আগে প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার থেকে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ছুটির জন্য কারণ দেখিয়ে নির্দিষ্ট নথি জমা করতেও বলা হয়েছে। পাশাপাশি, স্কুলের চত্বর পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়টি এবার থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, স্কুলের সব রেজিস্টার প্রতিদিন আপ-টু-ডেট রাখতে হবে।