একাধিক দুর্নীতি মামলায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে বিগত একবছর ধরে। এর মাঝে মেডিকেল কলেজ দুর্নীতি মামলা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই মামলা মূলত নিট পরীক্ষায় ভুয়ো শংসাপত্র নিয়ে। অভিযোগ দায়ের হয় যে ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছে অনেক প্রার্থী বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই মর্মে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে এইভাবে একাধিক প্রার্থী ভর্তি হয়েছেন বলে মামলা দায়ের করেন ইতিশা সোরেন নামে এক প্রার্থী। সেই মামলা গত বছর থেকে চলছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।
আর এই মামলায় কয়েকদিন আগেই হাইকোর্টে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। কারণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন দুই বিচারপতি। একদিকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, অন্যদিকে বিচারপতি সৌমেন সেন। বিচারপতি সৌমেন সেনকে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট বলেও অভিহিত করতে শোনা গিয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। এই এই বিষয়ে তোলপাড় হয় কলকাতা হাইকোর্ট চত্বর। মামলাটি স্থগিত করে দেওয়া হয় হাইকোর্টে। আর এবার এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য।
জানা গেছে, এই মামলাটি নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা মামলা করলো রাজ্য। জানা গেছে, ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে। অনলাইনে এই মামলা দায়ের করবে রাজ্য। সোমবার এই মামলার শুনানি হতে লারে বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় যে এই মামলার শুনানি হওয়ার আগে অবধি কলকাতা হাই কোর্টে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে। এর পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্ট এও নির্দেশ দেয় যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা-ও স্থগিত রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, এই মেডিকেল দুর্নীতি মামলায় কিছুদিন আগেই হাইকোর্টের শুনানিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই মর্মে তিনি জানিয়েছিলেন, “রাজ্য দিনে দিনে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হচ্ছে। শেখ শাহজাহানকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। রাজ্য পুলিশের উপর আদালতের কোনও আস্থা নেই। সেই কারণে সিবিআইয়ের উপর এই মেডিক্যাল কলেজ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্তভার দেওয়া হচ্ছে।”