দক্ষিণেশ্বর মেট্রো সম্প্রসারণ নিয়ে দ্বার মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্যের বিবাদ পৌঁছে গেল চরম পর্যায়ে। মেট্রোর জন্য রাজ্যের তৈরি স্কাইওয়াক ভাঙার প্রস্তাবে জলঘোলা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। কয়েকদিন আগেই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই বিষয়ে মেট্রোকে তোপ দাগেন। আর এবার এই বিষয়টি নিয়ে আসরে নামলেন স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেট্রোর সম্প্রসারণে যে রাজ্যের তৈরি এই স্কাই-ওয়াক ভাঙা হবে না, তা সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। একইসঙ্গে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। নিজের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ের উদাহরণ টেনে তিনি কটাক্ষ করলেন রেলকে।
গত শনিবার এই বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর এবার এই বিষয়টি মঙ্গলবার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি বলেন, “এদের ঔদ্ধত্য দেখে আমি অবাক হয়ে যাই! হাত দিচ্ছে কোথায়? হাত দিচ্ছে দক্ষিণেশ্বরে! ক’দিন বাদে বলবে কালীঘাটটা দিয়ে দাও! শুনব না। যদি আমাকে বলে নাখোদা মসজিদ ভেঙে দাও আমি থোড়াই শুনব? এগুলো আমি মানতে বাধ্য নই। মানব না। যদি ওদের কোনও রকম জট হয় সেই জট আমি দূর করব। দরকারে আমার সঙ্গে বসুন। আমি অন্য রুট দেখিয়ে দেব। রুট বদলাতে সাহায্য করব। এমন আগেও অনেক করেছি।”
এছাড়াও তিনি মেট্রোর পরিকল্পনাকে কটাক্ষ করে বলেন, “আমাকে ম্যাপ দেখিয়ে বলা হয়েছিল, এই প্রকল্পের জন্য এত জমি চাই, আমি সরেজমিনে সার্ভে করিয়েছিলাম। আর ১৫ হাজার একর মানুষের জমি বাঁচিয়ে দিয়েছিলাম। ফলে সমস্যার সমাধান করতে চাইলে আমি সহযোগিতার হাত সব সময় বাড়িয়ে রেখেছি। আগামী দিনেও সহযোগিতা করব। কিন্তু তোমরা আমাদের বুকের উপর বসে আমাদের দীর্ঘ দিনের যে হেরিটেজ, তা ওরা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করবে, সেটা আমি হতে দেব না।” এর সঙ্গে তিনি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের প্রতি সাফ বাফাটা দিয়ে বলেন, “দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক হৃদয়ের মণিমুক্ত। পুলিশের হৃদয়ের মণিকোঠায় আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স। এর কোনওটাই আমি ভাঙতে দেব না। দরকারে রুট বদলাতে সাহায্য করব।”
এর পাশাপাশি, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ের উদাহরণ টেনে রেলকে তোপ দাগেন। এদিন নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, “আমি দীর্ঘ দিন রেল মন্ত্রক সামলেছি। কোনও সমস্যা হলে কী ভাবে তার সমাধান করতে হয়, তা আমি জানি। বাংলায় মেট্রো জ়োন আমি তৈরি করেছিলাম। দিল্লির মেট্রোর সমস্যা আমি দূর করেছিলাম। আমি না থাকলে দিল্লি মেট্রোই হত না। জট ছিল। আমি ডেকে সমাধান করেছিলাম। এখনও করতে পারি। তবে শুধু ম্যাপ নিয়ে বসলে হবে না। সরজমিনে সার্ভে করতে হবে। তার পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে”।