তাঁর সুরেলা কণ্ঠে দিন-রাত কেটে যায় আপামর ভারতবাসীর। তাঁর সুরে যেমন প্রেম রয়েছে তেমনই রয়েছে মনখারাপের রেশ। তিনি হলেন অরিজিৎ সিং। বাংলার এই গায়ক এখন বি-টাউনের গানের জগতে এক অন্যতম নক্ষত্রে পরিণত হয়েছেন। তবে, জিয়াগঞ্জের এই যুবকের নেই কোনও অহংকার কিংবা কোনও দম্ভ। তার পরিচিতি একজন মাটির মানুষ হিসেবেই। তাই বোধহয় মানুষের কথা এত চিন্তা করেন তিনি। আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতই তাঁর জীবনযাত্রা। আর এভাবেই তিনি আর পাঁচজনকে নিয়েই সামাজিক এক মানুষ হয়ে বাঁচেন এই গায়ক। তাই হয়তো তার জনপ্রিয়তা ক্রমেই বেড়েছে দিনের পর দিন।
এদিকে শুধু মাটির মানুষ হয়ে জন্মভূমিতে থাকা নয়, শুধুমাত্র সেখানে মিলেমিশে থাকা নয়, সেখানের উন্নয়নের বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করেন এই তারকা শিল্পী। তাই আজ অরিজিতের হাত ধরে নানাভাবে উন্নতির শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে তার স্বপ্নের মফঃস্বল জিয়াগঞ্জ। মুর্শিদাবাদ জেলার এই এলাকায় অনেক কিছু নির্মাণ করতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। আর এই বিয়ে তাকে সাহায্য করতে বারংবার স্নেহের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার তিনি করে ফেললেন এক বড় ঘোষণা।
ইতিমধ্যে জিয়াগঞ্জে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন এই গায়ক। জানা গেছে, নিজের এলাকায় তিনি বানিয়েছেন মেয়েদের ইংরাজি শিক্ষার ক্লাস, খেলার মাঠের সংস্করণ থেকে শুরু করে হাসপাতাল, বিদ্যালয়। আর এবার নিজের প্রয়াত মায়ের নামে হাসপাতাল খুলতে চলেছেন গায়ক। আর এবার তার এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বুধবার সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “অরিজিৎ খুব ভালো গান গায়। তাঁকে জঙ্গীপুরে জমি অ্যাপ্রুভ করে দিয়েছি। কারণ অনেক বড় স্কুল থেকে শুরু করে, আরও অনেক কিছু করছে। আমরা খুশি, আমরা তাঁকে আগাম অভিনন্দ জানাই।”
উল্লেখ্য, বাঙালি মা এবং শিখ সম্প্রদায়ভুক্ত বাবার সন্তান হলেন অরিজিৎ সিং। ছোট থেকেই তিনি বেড়ে উঠেছেন মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জে। তাই সেখানেই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে ২০২১ সালে গায়কের জীবনে নেমে আসে এক বড় বিপর্যয়। এই বছরের করোনাকালীন সময়ে নিজের মা’কে হারিয়েছিলেন অরিজিৎ সিং। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অদিতি সিং। ৫৭ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন গায়কের মা। জানা যায়, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথমে বহরমপুর মাতৃসদনে ভর্তি ছিলেন গায়কের মা,পরবর্তীতে ঢাকুরিয়া আমরিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কোভিড-মুক্ত হলেও শেষমেশ মাল্টি অর্গান ফেলিওরের জেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। আর তাই এবার মায়ের স্মরণে হাসপাতাল নির্মাণ করতে চান গায়ক।