ভারত ও বাংলাদেশ, দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত যিনি লিখে গেছেন, সেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, “আমরা বন্ধুর কাছ থেকে মমতা চাই, সমবেদনা চাই, সাহায্য চাই ও সেই জন্যই বন্ধুকে চাই।” ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এমনটাই। ইতিহাসও দুই দেশের বন্ধুত্বের কথা বলে। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বরে স্বাধীন একটি দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল প্রতিবেশী ভারত। বাংলাদেশের এই মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটির বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি যুদ্ধেও সহায়তা করেছিল ভারত। এখনো একসাথে ওই দিনে ‘মৈত্রী দিবস’ উদযাপন করে দুই দেশ।
আর এই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমারেখা থাকলেও দুই দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তার অন্যতম কারণ হল দুই দেশের মানুষের নানা কাজের সুবিধা। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ কলকাতায় আসেন চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও ব্যবসার জন্য কাঁটাতার পেরিয়ে বহু মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। মূলত, বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসা মানুষের সংখ্যাটা সর্বাধিক। কাজেই গঙ্গাপার ও পদ্মাপারের দুই বাংলা আলাদা হলেও যেন আবদ্ধ হয়ে রয়ে গেছে একটি মৈত্রীর সুতোর মাধ্যমে।
বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতের জন্য তিনটি ট্রেন চালু রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ট্রেন হল মৈত্রী এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে কলকাতা আসে এবং কলকাতা থেকে ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এছাড়াও রয়েছে বন্ধন এক্সপ্রেস, যেটি খুলনা ট্যেকে কলকাতা রুটে চলাচল করে। এছাড়াও রয়েছে মিতালি এক্সপ্রেস। এই ট্রেন হলদিবাড়ি এবং চিলাহাটি রুট দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি-ঢাকা রুটকে সম্পন্ন করে। এই ট্রেনটি সপ্তাহে দুদিন চলে। তবে দুই দেশের যাত্রীদের এই সমস্যা দূর করতে এবার এক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, কলকাতা থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাস পরিষেবা চালু করা হয়েছে। রাজ্য পরিবহন নিগমের পক্ষ থেকে এই বাস চালানো হবে। জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহের সোমবার, বুধবার ও শুক্রবার ঢাকাগামী এই বাস ছাড়বে কলকাতা থেকে। সকাল ৭ টায় সল্টলেকের করুণাময়ী আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার বাস মিলবে। এই বাস কলকাতা থেকে ঢাকা পৌঁছাতে সময় নেবে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা। অর্থাৎ, বিকেল ৪টার আশেপাশে ঢাকা পৌঁছাবে এই বাস। অন্যদিকে ফেরার বাস মিলবে ঢাকার কমলাপুরের বিআরটিসি বাসটার্মিনাল থেকে। প্রতি মঙ্গল, বুধ ও শুক্রবার এই বাস ছাড়বে। কলকাতা থেকে ঢাকা বা ঢাকা থেকে কলকাতার এই বাসের ভাড়া রাখা হয়েছে ১,৪০০ টাকা।