শহর কলকাতার বুকে ১৯৮৪ সালে চালু হওয়া মেট্রোরেল পরিষেবা শহরকে এক ঐতিহ্য প্রদান করে। এই পাতালরেল পরিষেবা যেন তিলোত্তমা নগরীকে মাটির নিচেও গতিশীল বানিয়ে তুলেছে। একটা সময় উত্তর দক্ষিণে শুধুমাত্র দমদম থেকে টালিগঞ্জ এলাকার মধ্যে চালু ছিল মেট্রো পরিষেবা। পরবর্তীতে সেই রুট বর্ধিত করে উত্তরে দক্ষিণেশ্বর এবং দক্ষিণে নিউ গড়িয়া পর্যন্ত করা হয়। আবার অন্যদিকে চালু হয় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা। এদিকে আবার রয়েছে জোকা-তারাতলা মেট্রো, যা ভবিষ্যতে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। এদিকে আবার নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চলছে মেট্রোর কাজ।
আর কয়েকদিন পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে উদ্বোধন হবে ‘ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো’ প্রকল্পের। এই প্রকল্পের আওতায় গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো রেল চালানোর বিষয়ে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা এই সুড়ঙ্গে আলো বসানোর কাজও সম্পন্ন করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এদিকে হাওড়া স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষের মুখে। আগামী বুধবার এই স্টেশন সহ এই মেট্রো রুটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাই চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে এখন এই স্টেশন ও মেট্রো টানেলে।
তবে উদ্বোধনের আগেই এক নতুন শিরোপা পেয়েছে হাওড়া মেট্রো স্টেশনটি। কারণ এই স্টেশনকে এবার থেকে দেশের সবথেকে গভীরতম স্টেশন বলে গণ্য করা হবে। কারণ এই স্টেশন মাটির ৩২.০০৪ মিটার অর্থাৎ প্রায় ১০৫ ফুত গভীরে অবস্থিত। এতদিন আগে এই তকমা ছিল দিল্লি মেট্রোর অধীনস্থ ‘হৌজ খাস’ স্টেশনের মুকুটে। তবে এবার থেকে এই তকমা পাচ্ছে হাওড়া মেট্রো স্টেশন। আর এই গভীরতম স্টেশন নির্মাণের সময় একাধিক বিয়ের উপর নজর দেওয়া হয়েছিল। একদিকে যেমন গভীরতার কারণে জলের চাপ কমানো ছিল চ্যালেঞ্জিং, অন্যদিকে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার কারণে কম্পনকে মাটির নিচে কমানো ছিল কঠিন কাজ। তবে সবটাই সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্রের খবর, দেশের সবথেকে গভীরতম এই মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ করতে বা স্টেশন থেকে বেরোতে হলে যাত্রীদের ভাঙতে হবে ২০০ সিঁড়ি। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে এখানে রয়েছে চলমান সিঁড়ি এবং লিফটের ব্যবস্থা। জানা গেছে, স্টেশনের মুখেই রয়েছে ২৬ টি চলমান সিঁড়ি এবং ৭ টি লিফ্ট। এছাড়াও চারটি প্ল্যাটফর্ম থাকছে এই স্টেশনে। ভিড় সামাল দিতে তৈরি হয়েছে ১৫ টি টিকিট কাউন্টার। জানা গেছে, মেট্রো থামলে দুদিকের দরজা খুলে দেওয়া হবে। যাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে এই ব্যবস্থা বলে জানা গেছে।