পাট হল একটি পরিবেশ বান্ধব ফাইবার। শিল্প বিপ্লবের সময় ফ্লাক্স এবং হেম্প-এর স্থান দখল করে পাটের যাত্রা শুরু হয়। বস্তা তৈরির ক্ষেত্রে পাট এখনও গুরুত্বপূর্ণ। পাটের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অন্য অনেক ফাইবারের সঙ্গে এটিকে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। টেক্সটাইল সহ নানা প্রচলিত বয়ন শিল্পে পাটের উল্লেখযোগ্য ব্যবহার রয়েছে। এছাড়াও পর্দার কাপড়, কুশন কভার, কার্পেট, ইত্যাদি পাট থেকে তৈরি হয়। গরম কাপড় তৈরীর জন্য উলের সঙ্গে মিশ্রণ করা হয়। কৃষি পণ্য এবং অন্যান্য দ্রব্যাদি বস্তাবন্দি ও প্যাকিং করার জন্য ব্যাপকভাবে পাট ব্যবহার করা হয়। সেই কারণেই দুই বাংলাতেই পাটকে সোনালী আঁশ বলে তকমা দেওয়া হয়।
পাটকে তিনটি পর্যায়ে বাজারজাত করা যায়। প্রথম পর্যায়ে ছোট ছোট বাজারে, দ্বিতীয় পর্যায়ে বড় বড় বাজারে এবং তৃতীয়পর্যায়ে দেশীয় পাটকল সমূহে এবং বিদেশী বাজারে রপ্তানী করা হয়। কৃষকের হাত হতে একটি বিপণন ব্যবস্থার মাধ্যমে পাট রপ্তানী করা হয়। আর এই তৃতীয় পর্যায়েই সবথেকে বেশি পাট বাজারজাত করা হয়। কটন এই পর্যায়ে শুধুমাত্র দেশে বা স্থানীয় বাজারে নয়, বৈদেশিক বাজারেও পাটের কাঁচামাল পৌঁছে দেওয়া যায়। সেই কারণেই ব্রিটিশ আমলে বহু পাটকল চালু হয়েছিল বাংলায়। কিন্তু সময়ে সময়ে অনেক জুটমিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আর রাজ্যে বন্ধ হয়ে গেল একটি জুটমিল। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার তালা ঝুলেছে হাওড়া বিধানসভার অন্তর্গত হাওড়া জুট মিলে। শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণেই ফের একবার বন্ধ হল জুটমিলের দরজা। শ্রমিকদের অভিযোগ এটাই যে গত কয়েকদিন ধরেই এই জুটমিলের বিমিং ডিপার্টমেন্টের কর্মীদের দৈনিক বেতন থেকে এক ঘন্টার করে বেতন কেটে নিয়েছে মালিক কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, এই কারণে মিলের বিমিং ডিপার্টমেন্টের কর্মীদের মাসিক বেতন থেকে কারো বাদ গিয়েছে ১,৫০০ টাকা, কারো আবার বাদ গিয়েছে পুরো ২,০০০ টাকা। আর এই নিয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন ওই বঞ্চিত কর্মীরা।
যদিও সূত্রের খবর, হাওড়া জুটমিলের ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বিমিং ডিপার্টমেন্টের কর্মীদের কাজে যোগদান করার কথা বলা হলেও তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়েই আগ্রহ দেখিয়েছেন। আর এর মাঝে মঙ্গলবার ম্যানেজমেন্ট মিলের গেটে নোটিশ ঝুলিয়ে মিল বন্ধ করে দেয়। সেই নোটিশে সাফ লেখা রয়েছে যে বিমিং ডিপার্টমেন্টের কর্মচারীরা যতদিন না পর্যন্ত কাজে যোগ দিচ্ছেন ততদিন ব্যাচিং, ওয়েভিং-সহ অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের কাজ বন্ধ থাকবে। আর ঈদ ও নববর্ষের মুখে এভাবে কাজ চলে যাওয়ার মতো কঠিন অবস্থায় হাজার হাজার কর্মী। ম্যানেজমেন্ট এই বিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি।