দেশ দুনিয়ায় বাঙালির পরিচয় দেওয়া হয় মাছ দিয়ে। মাছ সবথেকে বেশি যদি কোথাও জনপ্রিয় হয়ে থাকে, তা হল বাংলায়। ভারত ও বাংলাদেশ- উভয় দেশের এই এলাকার মানুষজন মাছ খেতে ভীষণই পছন্দ করেন। তবে মাছের মধ্যে সবথেকে সুস্বাদু হল ইলিশ। ইলিশ মাছের নাম শুনলেই তো অনেকের জিভে জল এসে যায়। কারণ, সর্ষে ইলিশ হোক বা ইলিশ ভাপা কিংবা ভাজা ইলিশ- এই মাছ দিয়ে আপনি পছন্দ মতো যেকোনও পদ বানিয়ে ফেললেই খাবার থালায় এক দানা ভাতও পড়ে থাকবে না। আর সিংহভাগ বাঙালি ইলিশপ্রেমী হয়ে থাকেন।
মূলত বর্ষায় প্রজননের সময় এই ইলিশ সমুদ্রের খর জল থেকে নদীর মৃদু জলে এসে প্রবেশ করে। তাই এই সময়েই ইলিশের আমদানি ঘটে বাংলার নদীতে। মূলত পদ্মা নদীর ইলিশ স্বাদ ও গন্ধের জন্য জগতবিখ্যাত। তবে পদ্মা ছাড়াও অনেক নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়। কিন্তু সামনেই সরস্বতী পুজো। আগামী ১৪ ই ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে রয়েছে বাগদেবীর আরাধনা। এই দিনটিতে অঞ্জলি দিয়ে দাঁড়াদিন ঘোরাফেরার পর খিচুড়ি খাওয়ার মজা নেন সকলেই। কিন্তু সেই খিচুড়ির সঙ্গে যদি ইলিশের ভাজা পিস পাওয়া যায়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা ব্যাপার ঘটে। কিন্তু এই সময় ইলিশ? কিভাবে মিলবে? এবার এই অসম্ভবই সম্ভব হয়ে গেল।
প্রজননের সময় বর্ষাকালে ইলিশ পাওয়া গেলেও এবার শীতের শেষলগ্নে, সরস্বতী পুজোর ঠিক আগেই মিলল ইলিশের দেখা। নদী থেকে এবার উঠে এলো টাটকা ইলিশ। জানা গেছে, কাকদ্বীপ রলাকে জেলেদের জালে উঠে এসেছে রুপোলি ফসল। তাদের কথায়, সাধারণত এই সময় ইলিশ দেখা যায়না। কিন্তু এবছর এই ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। যেখানে সমুদ্রে বা মোহনায় ইলিশ পাওয়া যায়, সেখানে মুড়িগঙ্গা নদীতে এবার উঠে এসেছে প্রমান সাইজের ইলিশ মাছ। একটি বা দুটি নয়, এক্কেবারে ঝুড়ি ঝুড়ি ইলিশ উঠেছে সেখানে।
আর এই ইলিশের নাম শুনেই ব্যাগ হাতে বাজারে ছুটছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে যারা ইলিশের প্রতি আসক্ত, তারাই ছুটছেন বাজারে। এই অসময়ে ইলিশের দেখা পাওয়া তো আর মুখের কথা নয়! কিন্তু ইলিশের দাম কেমন রয়েছে এই সময়ে? কাকদ্বীলের বাজারে এই সময়ে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ইলিশ বিক্রি চলছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম মাছ বিকোচ্ছে ৮০০ টাকা প্রতি কেজি দামে। তবে ১ কেজি ওজনের ইলিশ মিলছে ১২০০ টাকা প্রতি কেজি দরে। কিন্তু যারা ইলিশ ভালোবাসেন, তাদের কাছে এই দাম যেন কিছুই নয়। তাই অসময়ে ইলিশ দেদার বিকোচ্ছে বাজারে।