পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বেকারত্বের হার বাড়ছে দিন দিন। জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকার যুবক ও যুবতীদের সংখ্যাটা। আর রাজ্যে একাধিক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি সামনে আসায় এখন কার্যত দিশেহারা রাজ্যের শিক্ষিত যুব সমাজ। তবে ছবিটা যে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের বুকে এতটা ভয়াবহ, তা কিন্তু নয়। গোটা দেশেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বেকারদের সংখ্যা। শিক্ষিত যুব সমাজের বেশিরভাগই আজ কর্মহীন। কাজের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেউ কেউ। কেউ আবার সরকারি চাকরির আশায় দিন গুনছেন।
আর এই বেকারত্ব ইস্যু নিয়ে বারবার বাংলার বুকে সুর চড়িয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। এমনকি লোকসভা ভোটের প্রচারে ভাষণ দিতে গিয়েও বারবার রাজ্যকে নিশানা করে রাজ্যে বাড়তে থাকে বেকারের সংখ্যাটা তুলে ধরেছেন বঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। একইসঙ্গে, এই সময়ে বাংলার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। তবে ভোটের ময়দানে বিরোধীদের জবাব দিতে এমনকি রাজ্যের শিক্ষিত যুব সমাজকে আশার আলো দেখতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এমন এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে শিল্পের ছড়াছড়ি হতে পারে বাংলার বুকে। কারণ এবার থেকে রাজ্যের যেসব জমি ফাঁকা ও অব্যবহৃত হিসেবে পড়ে রয়েছে, সেগুলিতে ইন্ডাস্ট্রি তৈরির চিন্তাভাবনা করবে রাজ্য। এমনকি অনেক বড় শিল্পপতি বেশি জমি নিয়ে সেগুলিকে কাজে লাগাতে না পারলেও সেগুলিকে নতুন শিল্প তৈরির জন্য ব্যবহার করা হবে। এর ফলে একদিকে যেমন জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে না, অন্যদিকে এর ফলে রাজ্যে বিনিয়োগ ও শিল্পের সংখ্যা বাড়বে। আর এই বিষয়ে সম্প্রতি নবান্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়।
নবান্নের এই বৈঠক শেষে রাজ্যের শিল্প মন্ত্রী শশী পাঁজা এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন। তিনি বলেন যে বিগত সময়ে ৯ টি শিল্পপার্ক গড়ে তোলার জন্য ১,৭৩৯ একর জমি বরাদ্দ হয়েছে। আগামীতে আরো ১,০৫৪ একর জমিতে শিল্প তৈরির পরিকল্পনা চলছে। শিল্প মন্ত্রী জানান যে এই মোট জমির মধ্যে ১৯৩ একর জমি রয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের ঢাকেশ্বরী মিলে, ১৩২ একর জমি রয়েছে দুর্গাপুরে, ৩১০ একর জমি রয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের মঙ্গলপুরে, ৩৫০ একর জমি রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়, ৬৯ একর জমি রয়েছে বেলুড়ের কাছে নেসকোয়। এই জমিতে আগামী দিনে শিল্প গড়ে উঠবে এবং সেখানেই তৈরি হবে হাজার হাজার কর্মসংস্থান।