দুর্গাপূজা হোক বা শীতের ছুটি, কাজ থেকে ফুরসৎ মিললেই অনেকে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাড়ি থেকে। কখনও গন্তব্য হয়ে থাকে পাহাড়, কখনো সমুদ্র, কখনো ঐতিহাসিক স্থান, কখনো ধর্মীয় স্থান, আবার কখনো কোনো শান্ত জায়গা। বাঙালির কাছেপিঠের সুন্দর জায়গার অন্যতম হল পুরী। সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে এখানে ধর্মীয় স্থান হিসেবে রয়েছে জগন্নাথ দেবের মন্দির। সেই কারণেই সারা দেশ থেকে সারাবছর লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী হাজির হন ওড়িশার এই নগরীতে। বিশেষ করে বাঙালি পুণ্যার্থীর ভিড় হয় পুরীতে।
অন্যদিকে দীঘা হল বাঙালির অন্যতম কাছেপিঠের ডেস্টিনেশন। দীঘা সমুদ্র সৈকত বাঙালির মনে যেন একটা আলাদা জায়গা পায়। কারণ, দীঘায় রয়েছে শান্ত সমুদ্রের নাতিশীতোষ্ণ নোনা বাতাসের সরগম। এই সমুদ্র সৈকতের ফাঁকা বালিয়াড়িতে বসে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত বেশ নয়নাভিরাম দৃশ্য। তেমনই সেই সমুদ্র সৈকতে রয়েছে মৎস্যলালসা নিবারণের উপায়। দীঘার বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি জুড়ে রয়েছে বহু সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়ার খুচরো স্টল। যে স্টলে গেলেই খুব কম দামে উদরাভিরাম হয় বাঙালির।
তবে এই দীঘা থেকে পুরী যাওয়ার কোনো সরাসরি ট্রেন বা বাস কিছুই নেই। সেই কারণেই অনেক পর্যটক এই দুই সৈকত নগরী একযোগে ভ্রমণ করতে চাইলেও উপায় খুবই কম। একদিকে জেম। দীঘা থেকে খড়্গপুর গিয়ে পুরীর ট্রেন পাওয়া যায়, অন্যদিকে কাঁথি থেকে পুরী যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। কিন্তু এই দুই উপায়েই দীঘা থেকে পুরী যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে এবার এমন এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যার ফলে পর্যটকদের পাশাপাশি অনেক ব্যবসায়ীও উপকৃত হতে চলেছেন। ঠিক কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে? জেনে নিন।
সম্প্রতি, তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী এই মর্মে একটি সুখবর দিয়েছেন। তিনি জানা যে শীঘ্রই জলেশ্বর রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে। তিনি বলেন যে দিঘা থেকে জলেশ্বর অবধি মোট ৭২ কিমি রেলপথ নির্মাণের কাজ ২০১১-১২ সালে অনুমোদিত হয়। এই প্রকল্পের জন্য ১৮৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এর জন্য ৫০৭ একর জমি প্রয়োজন। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১৩৭ একর এবং ওড়িশার ৩৭০ একর জমি প্রয়োজন। এই জমি জট মিটলে এই প্রকল্পের কাজে গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই রেলপথ খুলে গেলে উপকৃত হবেন লাখ লাখ মানুষ।