বর্তমান সময়ে ভারতীয় রেল আমাদের দেশের গণপরিবহণ ব্যবস্থায় এক অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ রেল নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে ভারতের বুকেই। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত এই বিশাল সিস্টেম। প্রায় প্রতিদিনই দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনের মাধ্যমে পৌঁছে যান নির্দিষ্ট গন্তব্যে। যাত্রী পরিবহন থেকে শুরু করে দৈর্ঘতার নিরিখে ভারতীয় রেল বিশ্বে চতুর্থ স্থান দখল করে। সুদূর জম্মু থেকে কন্যাককুমারী, আসাম থেকে রাজস্থান- সর্বত্র বিছিয়ে রয়েছে রেলের যোগাযোগ। আর এই বিশাল দেশে রেল ব্যবস্থা চালু রয়েছে বছরের সবকটি দিনই।
ভারতীয় রেলের অধীনে অনেক ধরণের ট্রেন চলে। যেমন লোকাল ট্রেনে শহর বা জেলার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কিংবা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়া যায়, তেমনই আবার এক্সপ্রেস ট্রেনে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়া যায়। এর মাঝেই আবার রয়েছে সুপারফাস্ট এবং সেমি-হাইস্পিড ট্রেনও। তবে শুধুমাত্র দূরপাল্লার ট্রেনেই দেওয়া হয় স্লিপার কোচ ও এসি কোচের। আর রেলের এই ইঞ্জিন ও বগি নির্মিত হয় আলাদা আলাদা কারখানায়। তবে পশ্চিমবঙ্গ রেলের ইঞ্জিন তৈরিতে অনেকটা বড় দায়িত্ব পালন করে।
আর এবার রেলের ইঞ্জিন তৈরিতে নতুন রেকর্ড তৈরি করলো রাজ্যের একটি রেল ইঞ্জিন নির্মাণ ফ্যাক্টরি। চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কাসের ডানকুনির কারখানা এবার বিরাট কীর্তি করতে চলেছে। কারণ এই কারখানা থেকেই এক বছরে সবথেকে বেশি রেল ইঞ্জিন তৈরি হতে চলেছে। জানা গেছে, এই বছরে সবথেকে বেশি ১০১ টি ইঞ্জিন তৈরি হবে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কাসের ডানকুনির কারখানায়। তবে এখানেই এই নজির সীমিত নেই। এই নজির দেখা গিয়েছে এই মার্চে। কারণ এই মার্চ মাসের এক দিনে এই কারখানার কর্মচারীরা ১২ টি লোকোমোটিভ ইঞ্জিন তৈরি করে ফেলেছিল। যদিও এই কারলহানায় একাধিক প্রতিকূলতা রয়েছে। যদিও সেসব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে একের পর এক সাফল্য অর্জন করে চলেছে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কাসের ডানকুনির কারখানা।
উল্লেখ্য, ৮ বছর আগে এই কারখানার যাত্রাপথ শুরু হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই কারখানার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। ২০১২ সালের ২৮ মে এই কারখানার শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত একটি ইলেকট্রিক লোকো কমপোনেন্ট কারখানা ও ডিজেল কম্পোনেন্ট ফ্যাক্টরির শিলান্যাস হয় এদিন। তারপর থেকে সাবলীলভাবে কাজ হয়ে আসছে এই কারখানায়। জানা গেছে, গত বছর এই কারখানা থেকে ৭৫ টি ইঞ্জিন তৈরি হয়। সেই সংখ্যাটা এবার বাড়তে বাড়তে পৌঁছে যাচ্ছে রেকর্ডের সীমানায়।