বাঙালি যেমন ভ্রমণপ্রিয়, তেমনই বাঙালিকে খাদ্যরসিকও বলা হয়ে থাকে। কারণ বাঙালি খাবারের থালায় কোনো আপোষ করেনা। দেশবিদেশে মূলত, মাছে-ভাতে বাঙালির পরিচয় দেওয়া হলেও অন্যান্য খাবারের চাহিদাও বাংলায় অনেকটাই বেশি। সেই কারণে, অন্যান্য রাজ্যের নানা খাবারকেও আপন করে নিয়েছে বঙ্গবাসী। সে মোঘলাই পরোটা হোক বা সিঙ্গাড়া, চাউমিন হোক বা পাস্তা-সবই বিক্রি হয় বাংলার বুকে। তবে ভিনরাজ্যের খাবার হিসেবে বাংলায় সবথেকে বেশি চাহিদা যে খাবারের, তা হল বিরিয়ানি। মোঘল সাম্রাজ্যে সৃষ্ট এই খাবার এখন পাওয়া যায় বাংলার অলিতে গলিতে।
কলকাতার বুকে বিরিয়ানির একাধিক পরিচিত ঠিকানা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল আর্সনাল, হাজি, ডি-বাপি ও দাদা বৌদির বিরিয়ানি। মূলত ব্যারাকপুর থেকেই পথচলা শুরু হয় দাদা বৌদির বিরিয়ানির। তবে এখন কলকাতার আশেপাশে মোট তিনটি আউটলেটে রয়েছে দাদা বৌদির বিরিয়ানির। যার মধ্যে ব্যারাকপুরে রয়েছে তাদের আদি দোকান। তাদের দ্বিতীয় আউটলেটটিও রয়েছে ব্যারাকপুরেই। এছাড়াও বছরখানেক আগে সোদপুরে দাদা বৌদির বিরিয়ানির তৃতীয় আউটলেট খোলা হয়েছে। এই তিনটি দোকানেই রমরমা ভিড় হয় প্রতিদিনই।
তবে এবার চতুর্থ আউটলেট খোলার পথে দাদা-বৌদি। জানা গেছে, এই নতুন আউটলেট খোলা হবে মধ্যমগ্রামে। এই দোকানের সঠিক লোকেশন হল মধ্যমগ্রাম ও বিমানবন্দর রোডের উপর বি.টি কলেজ বাস স্টপের মাঝামাঝি এলাকায়। জানা গেছে, এই আউটলেট হবে ছয় তলার। আর এটিকে পয়লা বৈশাখের দিনেই খোলা হবে। তবে প্রথমেই ছয় তোলা রেস্তোরাঁ খুলবে না। শুরুতে গ্রাউন্ড ফ্লোর ও একতলায় চালু হবে রেস্তোরাঁ। পরে বিল্ডিংয়ের কাজ সম্পূর্ন হবে। তাই এটি মধ্যমগ্রামবাসীর জন্য যে বড় সুখবর বয়ে আনছে, তা বলাই যায়।
প্রসঙ্গত, দোকানের প্রতিষ্ঠাতা একরকম বলা যেতে পারে রামপ্রসাদ সাহাকে। ব্যারাকপুরে এসে তিনি প্রথম রুটি সব্জির এই দোকান চালু করেন। সেখান থেকে শুরু হয় ভাতের হোটেল। রামপ্রসাদের পর তার ছেলে ধীরেন সাহা এবং তার স্ত্রী হাল ধরলেন ব্যবসার। তারাই এই দোকানের নাম দেন দাদা বৌদির হোটেল। তবে এই দাদা বৌদির বিরিয়ানির আসল কান্ডারি যদি বলতে হয় তাহলে কিন্তু মূল কৃতিত্ব রামপ্রসাদের দুই নাতির। তাদের হাত ধরেই এই দোকানে প্রথম বিরিয়ানি বিক্রি শুরু হয়। প্রথম থেকেই সবার মন জিতে নিয়েছিল এই বিরিয়ানি। আস্তে আস্তে লোকমুখেই হতে লাগল প্রচার।