বকেয়া DA প্রদান এবং DA বাড়ানোর দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের আন্দোলন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এই পরিস্থিতির মাঝেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের বড় উপহার দিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।যদিও রাজ্যের সরকারি কর্মীদের অসন্তোষ কমাতে গতবছর একটি বড় ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন যে, ২০২৪ সালেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বাড়ানো হবে। কেন্দ্রের মতোই ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ৬ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন। তবে এই বৃদ্ধির জেরে এই ভাতার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ।
এখানেই শেষ নয়, কয়েকদিন আগে রাজ্য বাজেট পেশের সময় রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি বড় উপহার দেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ আরো ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা করেন। সেই মোতাবেক, রাজ্যের সরকারি কর্মীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় এই বর্ধিত ডিএ পাবেন। অর্থাৎ, এবার থেকে ১০ শতাংশ নয়, ১৪ শতাংশ হারে ডিএ পাবেন রাজ্যের কর্মীরা। আগামী মে মাস থেকেই কার্যকর হবে এই বর্ধিত ভাতা। যদিও তাতে কেন্দ্র ও রাজ্যের ডিএ পার্থক্য তেমনভাবে কমেনি।
এদিকে এই পরিস্থিতির মাঝেই মঙ্গলবার ডিএ আন্দোলনকারীরা দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে দেখা করেন। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক হয় অর্থমন্ত্রীর। এই বৈঠকে আন্দোলনকারীদের সব অভিযোগ শোনেন অর্থমন্ত্রী। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার কর সংক্রান্ত বকেয়া বাবদ দেশের ২৮ টি রাজ্যকে ১,৪২,১২২ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে বাংলা পেয়েছে ১০,৬৯২ কোটি টাকা। যদিও এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোন খাতে খরচ করবে, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি মমতা সরকারের তরফে। কিন্তু রাজ্য যে অজুহাতে সরকারি কর্মীদের ডিএ বাড়াতে রাজি হয়নি, তা হল কেন্দ্রের বকেয়া টাকা। যা এবার পেয়েছে বাংলা।
এদিকে এর পরেও রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ সংশোধন না করা হলে যে এই আন্দোলনের ঝাঁঝ আরো বাড়বে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ইতিমধ্যে আগামী ৩ মার্চ মহা মিছিলের ডাক দিয়েছেন তারা। তারপর আগামী ৬ মার্চ এবং ৭ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যের ডিএ আন্দোলন ফের একবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের বুকে। লোকসভা ভোটের মুখে কি এটি মমতা সরকারের জন্য চিন্তার কারণ হবে? এর উত্তর দেবে একমাত্র সময়।