বাঙালির কাছেপিঠের অন্যতম উইকেন্ড ডেস্টিনেশন হল দীঘা। বাংলার সৈকত নগরী পরিচয় পায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এই ছোট্ট শহর। মাছের ব্যবসার পাশাপাশি এখন অন্যান্য জিনিসের ব্যবসাও বেড়েছে দীঘায়। সেই কারণেই দিন দিন দীঘায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে ব্যাপকভাবে। এর ফলে ঢেলে সাজানো হচ্ছে সৈকত নগরী দীঘাকে। সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যায়নই শুধু নয়, তৈরি হচ্ছে দীঘার জগন্নাথ ধামও। পুরীর জগন্নাথ ধামের আদলে তৈরি হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের প্রকল্প।
জানা গেছে, দীঘার এই জগন্নাথ ধাম একেবারে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মতোই উঁচু হবে। ভোগঘর, বসার ঘর, রথ রাখার জায়গা- সব ব্যবস্থাই থাকছে দীঘার এই জগন্নাথ ধামে। দীঘার এই মন্দিরের জন্য বাইরের থেকে পাথর আনা হচ্ছে। পুরীর জগন্নাথ ধামের মূর্তিগুলি নিমকাঠের হয়। তবে এখানে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মূর্তিগুলির করা হচ্ছে মার্বেল পাথরের। এটুকুই ফারাক থাকছে। বাকি মন্দিরের ধ্বজা প্রতিদিনই নিয়ম মতো ওঠানো-নামানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ একর জমির উপর তৈরি হচ্ছে দীঘার এই জগন্নাথ ধাম। মন্দির তৈরির জন্য বিশেষ পাথর আনা হয়েছে রাজস্থান থেকে। নিউ দীঘা স্টেশন লাগোয়া এলাকায় বিস্তীর্ণ উঁচু বালিয়াড়ির ওপর গড়ে উঠছে এই জগন্নাথধাম।
আর এবার এই দীঘায় জগন্নাথ ধামের পাশাপাশি, এখানে রাম জন্মভূমি অযোধ্যার আদলে রাম মন্দির নির্মাণের দাবি উঠলো। এই দাবিকে কেন্দ্র করেই শহরে ঘুরলো কত মানুষ। দীঘায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য আবেদন জানানো হল ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ব্যবসায়ী কমিটি ও সনাতনীবৃন্দের পক্ষ থেকে। গত বৃহস্পতিবার এই কমিটির কিছু সদস্য দীঘা শহরের নানা এলাকা ঘুরে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের কাছে। দাবি, দীঘায় রাম মন্দির নির্মাণ করতে হবে। দাবি শুনে, শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা স্মারকলিপি গ্রহণ করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
এদিকে এই দাবি প্রসঙ্গে, ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ব্যবসায়ী কমিটি ও সনাতনীবৃন্দদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা আমাদের আবেদন একটি স্মারকলিপির মাধ্যমে জমা দিয়েছি। এখন স্থানীয় প্রশাসন এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ঠিক কী পদক্ষেপ করে তা দেখার অপেক্ষাতে রয়েছি।” তবে এর আগেও দীঘায় মসজিদ গড়ে তোলার দাবি উঠেছিল। আর এবার রাম মন্দিরের দাবি উঠলো। তবে অদূর ভবিষ্যতে এইসব দাবি পূরণ হলে যে দ্বার দীঘার সমুদ্র পর্যটন শিল্পে এবার ধর্মের দাপাদাপি বাড়বে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।