শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিগত একবছরের বেশি সময় ধরেই জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিকে অন্য এক জেলে রাখা হয়েছে তার একসময়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। ২০২২ সালের জুলাইয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর একাধিকবার আদালতে তাদের জামিনের আবেদন করা হলেও প্রত্যেকবার তার খারিজ করেছেন মহামহিম বিচারপতি। বরং তাদের জেরার পর একের পর এক রাঘব বোয়ালের সূত্র খুঁজে পেয়েছেন ইডির দুঁদে গোয়েন্দারা। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন জেলের অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছেন।
তবে এবার ঠিকানা বদলে যাচ্ছে পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে এবার অন্য ঠিকানায় পাঠানো হচ্ছে তাকে। তাহলে কি জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন অর্পিতা দেবী? না, তেমনটা মোটেই নয়। বরং বিষয়টা একটু অন্যরকম। বিষয়টি হল এটিই যে এবার থেকে শুধুমাত্র অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নয়, ঠিকানা বদলে যাচ্ছে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে থাকা সব জেলবন্দিদের। কারণ, এবার আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। তাহলে ঠিক কোথায় সরছে এই সংশোধনাগার? তা এবার জেনে নিন।
রাজ্য কারা দফতর সূত্রে জানা গেছে, শহরের মাঝখান থেকে নিরাপত্তার কারণে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারকে। করা দফতর এই বিষয়ে জানিয়েছে যে হাওড়ার জগাছা ব্লকের বালটিকুরি মৌজা এলাকায় তৈরি হচ্ছে নতুন সংশোধনাগার। আর সেই কাজ আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। আর তেমনটা হলে করা দফতরের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে যে এই বছরই জেলবন্দিদের সেখানে সরিয়ে ফেলা হবে। বর্তমানে ৩৫০ জন বন্দি রয়েছেন এই সংশোধনাগারে। তাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৪ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭৪৮ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলেও খবর মিলেছে।
কিন্তু কেন এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্যের করা দফতর। এই বিষয়ে জানা গেছে, শহরের মাঝে জেল থাকলে তাতে নিরাপত্তার অসুবিধা হয়। সেই কারণেই শহরের বুকে অবস্থিত সব সংশোধনাগারকেই সরিয়ে শহরের বাইরে করা হচ্ছে। আর যেহেতু আলিপুর একটি ব্যস্ততম স্থান, তাই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে করা দফতরের এক কর্তা জানান, “এক কর্তার কথায়, ‘‘দেশের বেশির ভাগ শহরের কেন্দ্র থেকে জেল অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর প্রধান কারণই হল নিরাপত্তা। আলিপুরের মতো ব্যস্ত এলাকায় জেল থাকাটা নিরাপত্তার দিক থেকে যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ।” এ বিষয়ে আইনজীবী তাপসকুমার ভঞ্জ বলেন, “শহর থেকে জেল সরানো নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। মহিলা বন্দিদের থাকার জন্য ভাল পরিবেশ পেলে অসুবিধা নেই। শুনেছি আলিপুরের তুলনায় হাওড়ার জায়গাটি বড়। তবে তাঁদের ন্যূনতম পরিষেবা দেওয়া হয়। খাবারের গুণমান এবং চিকিৎসা পরিষেবার দিকে কর্তৃপক্ষের আরও নজর দেওয়া উচিত।”