ভারতীয় রেলের অধীনে অনেক ধরণের ট্রেন চলে। যেমন লোকাল ট্রেনে শহর বা জেলার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কিংবা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়া যায়, তেমনই আবার এক্সপ্রেস ট্রেনে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়া যায়। এর মাঝেই আবার রয়েছে সুপারফাস্ট এবং সেমি-হাইস্পিড ট্রেনও। তবে শুধুমাত্র দূরপাল্লার ট্রেনেই দেওয়া হয় স্লিপার কোচ ও এসি কোচের সুবিধা। তেমনই আবার লোকাল ট্রেনে এমন কোনো সুবিধা মেলেনা। তবে এবার রেল ব্যবস্থাকে সাজিয়ে তুলতে যেমন ট্রেনের গতি বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তেমনই ট্রেনের স্টেশনগুলিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে অনন্য রূপে।
কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী কিছু শহর ও মফঃস্বল এলাকায় যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হল লোকাল ট্রেন। লাখ লাখ মানুষকে ভরসা যোগায় এই ট্রেনগুলি। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে যেমন এইসব লোকাল ট্রেন যায় ক্যানিং, বজবজ, বারাসাত অবধি, তেমনই আবার শান্তিপুর বা কল্যাণী অবধি যাওয়ার জন্যও রয়েছে একাধিক লোকাল ট্রেন। আর কল্যাণী রুটের সবথেকে জনপ্রিয় ট্রেন হল শিয়ালদহ-কল্যাণী সীমান্ত ট্রেনগুলি। কিন্তু শিয়ালদহ মেইন লাইন ও দক্ষিণ শাখার ট্রেনগুলির মধ্যে একটি বড় পার্থক্য হল এই দুই লাইনের লোকাল ট্রেনের কামরার সংখ্যা, যা নিয়ে এবার এল এক বড়সড় আপডেট।
শিয়ালদহ থেকে দক্ষিণের রুটের বেশিরভাগ লোকাল ট্রেনই হল ১২ কামরা বিশিষ্ট। পরিসংখ্যান বলছে, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় আপ ও ডাউন মিলিয়ে ১৩৪ জোড়া লোকাল ট্রেন চলে। যায় মধ্যে ১৩২ জোড়া ট্রেন হল ১২ কামরা বিশিষ্ট। এদিকে শিয়ালদহ মেইন শাখায় কিন্তু এই নিয়ে রয়েছে বৈষম্য। কারণ মেইন শাখায় চলে ১৮৬ টি আপ ও ১৮৮ টি ডাউন ট্রেন। যার মধ্যে মাত্র ৮৮টি করে ট্রেন ১২ কোচের, যেগুলি চালানো হয় অফিস টাইমের ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য। কিন্তু বাকি সময়ে এই শাখায় যাত্রীদের ভিড় সামাল দেওয়া এবার কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই এই নিয়ে বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে পূর্ব রেল।
উল্লেখ্য, শিয়ালদহ মেইন লাইনে ১২ কামরার লোকাল ট্রেন চালানোর প্রধান সমস্যা হল এই শাখার প্ল্যাটফর্মের স্বল্পদৈর্ঘ্যতা। শিয়ালদহ স্টেশনের পাশাপাশি অন্যান্য স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলিও ছোট দৈর্ঘ্যের। সেই কারণে এই শাখায় ১২ কামরার লোকাল ট্রেন চালানো সম্ভব হয়না। এই মর্মে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “এই ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গা থেকে যাত্রীদের কাছ থেকে দাবি আসছিল। যাত্রীদের এই বহুলালিত আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে পূর্ব রেল শিয়ালদহ উত্তর শাখায় চারটি প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির কাজ শুরু করছে। আশা করা যায়, এতে আরও বেশি সংখ্যায় ১২ কোচের লোকাল ট্রেন যাত্রীদের পরিষেবা দিতে পারবে।”