টলিউড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান প্রজন্মের সুন্দরী নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম মিমি চক্রবর্তী। একাধারে তিনি যেমন অভিনয়ে বিশেষ পটু, অন্যদিকে তেমনই আবার এই হার্টথ্রব অভিনেত্রী একজন সফল এক রাজনীতিবিদও বটে। তবে শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ নন, মিমি ছিলেন একজন সাংসদ। কলকাতার যাদবপুরের মতো হাইভোল্টেজ কেন্দ্র থেকে তিনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে। তবে সম্প্রতি তিনি চর্চায় রয়েছেন এক অন্য কারণে। এবার সাংসদ পদ থেকে মিমির ইস্তফার জন্য তাকে নিয়ে চলছে তুমুল চর্চা।
বৃহস্পতিবার বিধানসভা থেকে বেরিয়ে মিমি জানেন যে তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ওইদিন তিনি বলেন যে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইস্তফার চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেই ঘটনার একদিনও কাটেনি এখনো। এর মাঝেই ফের চর্চায় এলেন মিমি। কারণ এবার তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করলেন তার কাজের খতিয়ান। শুক্রবার বিকেলে একটি পোস্ট করে প্রাক্তন সাংসদ লেখেন, ‘আগামী দিনে আমি সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, আমার কাজের মাধ্যমে নিশ্চিতরূপে মানুষের হৃদয়ে থেকে যাব।’ এছাড়াও এই পোস্টে তিনি হিসেব দিয়েছেন যে ২০১৯ সাল থেকে তিনি মোট ১৭ কোটি টাকার কাজ করেছেন নিজের কেন্দ্রে।
মিমির এই পোস্টের শুরুতেই তিনি লেখেন, ‘বিগত পাঁচ বছর আমি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের সাংসদ হিসাবে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষের করের টাকা সঠিক ভাবে ব্যবহার করে উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। সৎপথে মাথা উঁচু করে এগিয়েছি। সেই সফরের কথা মনে করে আমার মারাত্মক আত্মতুষ্টি হয়। তাই বিগত পাঁচ বছরের সাংসদ রূপে আমার যাবতীয় কাজের খতিয়ান জনসমক্ষে তুলে ধরলাম’। তার দেওয়া কাজের হিসেব অনুযায়ী, বারুইপুর পশ্চিমে ১,৩৫,১৫,৯৮৯ টাকা, বারুইপুর পূর্বে ২,০২,২০,৫৫৬ টাকা, ভাঙড়ে ২,৯৫,৩১,০৩১ টাকা, যাদবপুরে ১,২৫,০৯,৯১২ টাকা, টালিগঞ্জে ৪২,৫৮,৪৫০ টাকা, উত্তর সোনারপুরে ৩,৯৬,২০,৬৪৬ টাকা এবং দক্ষিণ সোনারপুরে ৫,০৯,৪৬,০৩৭ টাকা খরচ হয়েছে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে। এছাড়াও এই পোস্টে কোভিডের সময় টাকা না আসার অভিযোগও করেন।
কিন্তু কেন আচমকা সাংসদ পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন মিমি? এই প্রশ্নের উত্তর তিনি নিজেই দিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। এই বিষয়ে ওইদিন মিমি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি আমার জন্য নয়। কারণ, রাজনীতি করলে আমার মতো মানুষকে গালাগালি দেওয়ার লাইসেন্স পেয়ে যায় লোকে। আমি লোকসভায় কত দিন উপস্থিত থেকেছি, কিছু লোকের তাই নিয়ে মাথাব্যথা। যদি এক মাস দিল্লিতে থাকি, লোকে বলবে সাংসদ দিল্লিতে থাকেন, এখানে কাজ করেন না। আবার এখানে থাকলে বলা হবে, সংসদে আমার উপস্থিতি কম। মানুষকে অনেক পরিষেবা দিয়েছি। নিজের কাজের প্রচার করতে পারিনি। আমি প্রচার করতে পারি না। এটাও রাজনীতি ছাড়ার অন্যতম কারণ। যত বার সংসদে গিয়েছি, আমার এলাকার কাজের কথা বলেছি। রাজ্যের কথা ওঁরা শোনেন না। তাই কাজও হয়নি। মানুষ ভেবেছে সাংসদ কাজ করেন না।”