বিগত কয়েকদিন ধরেই চর্চায় রয়েছেন অভিনেতা দেব। তবে অভিনেতা হিসেবে নয়, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তথা সাংসদ হিসেবে তাকে নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। কারণ গত দুই লোকসভা ভোটে ঘাটাল কেন্দ্রে দেবকে টক্কর দিতে পারেন নি কোনো বিরোধী প্রার্থী। একইভাবে ঘাটালের মানুষের মুখেও তার সুনাম শোনা যাচ্ছিল প্রায়ই। তাই এককথায় ঘাটাল কেন্দ্রে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটেও তাকে পুনরায় তৃণমূল প্রার্থী করার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। কিন্তু ভোটের মুখে তিন সরকারি পদ ছেড়ে দেন দেব। আর তাতেই তাকে ঘিরে বাড়ে জল্পনা।
আর এবার সেই জল্পনার আগুনে নিজেই ঘি ঢেলে দিলেন অভিনেতা দেব। সংসদে বাজেট অধিবেশনের শেষদিনে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে দেব যা বললেন, তাতে তার রাজনীতি ছাড়ার ইঙ্গিত মিলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। কিন্তু ঠিক কি বলেছেন এদিন অভিনেতা? বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষদিনে পার্লামেন্টে দেব বলেন, “আমি সাংসদ থাকি না থাকি, ঘাটালের মানুষের কষ্ট দূর হয় যেন। আমাকে ১০ বছর সুযোগ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ ঘাটালের মানুষকে, আমি সাংসদ থাকি বা না থাকি।”
যদিও তার এই কথার আগে তিনি ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানকে ফের একবার সংসদের সামনে তুলে ধরেন। দেব কথা বলেন, ঘাটালের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে। দেব বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে প্রথম বার সংসদে কথা বলেছিলাম। আজ সংসদে শেষ দিন আমার। ১৯৫০ সাল থেকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে টানাপোড়েন। ঘাটালের মানুষের অনেক দিনের কষ্ট। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, এটা তৃণমূল বা বিজেপি-র সমস্যা নয়, সাধারণ মানুষের সমস্যা।” এর সমাধানের আর্জিও তিনি জানান। দেবকে এদিন বলতে শোনা যায়, “দল-মতকে সরিয়ে রেখে পরবর্তী সরকার যেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করে। প্রতি বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হন সাধারণ মানুষ। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মানুষ যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা যেন সত্যি হয়।”
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই ঘাটাল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ, ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহা বিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট পদ এবং বীরসিংহ ডেভলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন দেব। আর তারপরেই তাকে ঘিরে নানা দুর্নীতির খোঁচা দেওয়া হচ্ছে বিরোধীদের তরফে। এদিন সংসদের সামনে এই বিষয়টি নিয়েও দেব মুখ খোলেন, এবং বলেন, “যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছি, তাহলে রাজনীতি কেন, আমি ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেব। কিন্তু যদি তা প্রমাণ করা না যায়, তাহলে তাঁরা রাজনীতি ছাড়বেন তো?” আর এই সব মিলিয়ে দেবের রাজনীতি ছাড়ার জল্পনা বেড়ে গেল কয়েকগুণ।