রেশন দুর্নীতি মামলায় কয়েকমাস আগেই গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গত এই ঘটনার পরেই রেশন দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে অতিরিক্ত সক্রিয় হয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। একাধিক জেলায় শুরু হয় ইডি অফিসারদের হানা। আগেও এবার একের পর এক কারখানা ও কোম্পানিতে হানা দিয়েছেন ইডি অফিসাররা। এই অভিযান শুরু হয় গত ৪ নভেম্বর। ওইদিন বনগাঁর কালুপুরের রাধাকৃষ্ণ ফ্লাওয়ার মিলে হানা দেয় ইডি। ওই মিলের মালিক মন্টু সাহা এবং কালীদাস সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এছাড়াও তাদের বাড়িতে গিয়েও তল্লাশি চালানো হয়। কারণ, এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যোগসূত্র ছিল বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে।
আর এবার জ্যোতিপ্রিয় সূত্র ধরেই এক বড় আর্থিক দুর্নীতির সন্ধান পেয়েছে ইডি। এবার কালো টাকা সাদা করার একটি বিশেষ সিস্টেমের তদন্তে নেমেছে ইডি। এর মাধ্যমে কালো টাকাকে বিদেশি মুদ্রায় পরিবর্তন করে সেগুলিকে বিদেশি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হত। আর এই পুরো চক্রের মাতারমাইন্ড হিসেবে ইডি’র জালে এসেছেন তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। জানা গেছে, শঙ্করের কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা এভাবে বিদেশি মুদ্রায় বদলে ফেলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতি মামলায় গত ৫ জানুয়ারি শংকর আঢ্যর বনগাঁর বাড়িসহ একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালায় ইডি। গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল নেতাকে। তারপর সোমবার ফের শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এদিন প্রথমে কলিন স্ট্রিটে অবস্থিত ‘ত্রিনয়নী ফোর এক্স প্রাইভেট লিমিটেডের’ অফিসে হানা দেয় ইডি। এই কোম্পানির সঙ্গে যোগ রয়েছে রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শঙ্কর আঢ্যর। এছাড়াও এদিন সল্টলেক সেক্টর ফাইভ এ সিডকো গ্লোবাল টাওয়ার এর ১২ তলায় শংকর আঢ্যর চার্টাড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অরবিন্দ সিং -এর অফিসে হানা দেয় ইডি। নিউমার্কেটের কাছে চৌরঙ্গী লেনে এস আর আঢ্য ফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেড এর অফিসে ইডির আধিকারিকরা হানা দেয়।
প্রসঙ্গত, এখনো অবধি রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে শঙ্করের নামে ৯০টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এর মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয়র বলে অনুমান ইডি। এর মধ্যে আবার ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে হয়ে দুবাইয়ে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে। সূত্রের খবর, এই টাকা বিদেশে বিনিয়োগের জন্য পাঠানো হয়েছিল।