হাতেগোনা আর কয়েকটি মাস, তারপরেই দিল্লির মসনদ দখলের মহারণ শুরু হবে ভারতে। ২০২৪ সালেই লোকসভা ভোট রয়েছে দেশে। আর এই ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের সব বিরোধী দলগুলি। যেহেতু দেশের প্রধান বিরোধী দলের তকমা হারিয়েছে কংগ্রেস, তাই এখন কংগ্রেসকে অন্যান্য রাজ্যস্তরের দলগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে হবে। এটা আগেভাগে বুঝে ২৮ টি দলকে নিয়ে তৈরি হয় ‘ইন্ডিয়া’ জোট। এই জোটের নামকরণ নিয়ে শুরুতেই বিতর্ক হয়। তবে এই বিতর্ক বাড়ে জোটের অন্দরে থাকা দলগুলির মতবিরোধের বাড়বাড়ন্তর কারণে।
সম্প্রতি, জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক সমস্যা। কয়েকদিন আগেই রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার বিষয়ে সৌজন্যতার অভাবের কারণে দেখিয়ে জোট থেকে হাত তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে পাঞ্জাবেও কংগ্রেসের জোটের সঙ্গে হাত মেলাবে না আম আদমি পার্টি, তাও মোটামুটি পরিষ্কার। এদিকে বিহারের বুকেও বড় ধাক্কা খেয়েছে ইন্ডিয়া জোট। কারণ নীতিশ কুমার এবার জোট ছেড়ে যাত্রা করেছেন পদ্ম শিবিরের দিকে। তাই এই পরিস্থিতিতে ভোটের মুখেই কার্যত মহা সমস্যায় পড়েছে কংগ্রেস।
বাংলায় তৃণমূলকে সঙ্গে পাওয়া নিয়ে যখন কংগ্রেসের অনিশ্চয়তা বাড়ছে, তখন জোটের মধ্যে বামেদের টানতে মরিয়া হাত শিবির। বাংলার বুকে ইতিমধ্যে একাধিকবার জোট বেঁধেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। অন্যান্য বাম শরিকদের তরফে গ্রীন সিগন্যাল না মিললেও সিপিএম কিন্তু কংগ্রেসের হাত ধরেছিল গত কয়েকটি ভোটে। আর এবার লোকসভা ভোটের আগেই তেমনটা হতে চলেছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। কারণ তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলার বুকে ভোটের রসায়ন কিছুটা নিজেদের দিকে টানতে যে বামেদের হাত ধরবে তারা, তা মোটামুটি নিশ্চিত।
এবার শোনা যাচ্ছে যে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় যোগ দিতে পারেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে, শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় যোগ দিয়েছে বামেরা। রাহুলের মিছিলে অংশ নেন সিপিএম, সিপিআই সমর্থকরা। এছাড়াও এই যাত্রায় মালদায় নগ দেবেন সুজন চক্রবর্তী ও শতরূপ ঘোষ। মুর্শিদবাদে রাহুলের যাত্রায় থাকবেন মহম্মদ সেলিম। এই বিষয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, “বাংলা একটা বিশেষ জায়গা। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে আদর্শগত লড়াই হয়েছিল, তার সূচনা এই বাংলা থেকেই। দেশকে রাস্তা দেখানো বাংলার কর্তব্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু থেকে বিবেকানন্দরা সেটাই করেছিলেন। বাঙালিদের মধ্যে সেই ক্ষমতা আছে। আপনারা যদি দেশকে রাস্তা না দেখান, তাহলে দেশ আপনাকে ক্ষমা করবে না.”