জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী মৃত্যুকালেও বলেছিলেন, ‘হে রাম..’। অনেকে বলেন, গান্ধীজি দেশের অন্যতম বড় রামভক্ত ছিলেন। তবে শুধু সেই সময় নয়, রাম ভক্তির সুনামি রয়ে গেছে আজও।রামের নামে এখনো দিন শুরু হয় কোটি কোটি মানুষের। আজও দেখা হলে ‘রাম-রাম’ বলার রীতি রয়েছে গোটা উত্তরভারতের মানুষের। দক্ষিণ ভারতেও রামের নামে দিন কাটে অনেকের। ঠিক যেন একটা দেশ, প্রভু রামকে স্মরণ করেই শান্তি পায়। যেন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদস্পন্দনের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ভগবান শ্রী রামের নাম। অনেকেই আবার ভগবান রামকে ভারতের আত্মা বলে বিবেচিত করেন। অনেকের কথায়, ভারতবর্ষ যতদিন থাকবে, ততদিন প্রভু রামের প্রতি ভক্তি বজায় থাকবে দেশবাসীর মনে প্রানে।
আর রাম মন্দিরের উদ্বোধন ও রামলালা প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিনেই দেশজুড়ে দেখা গেল উন্মাদনা। অনেকেই এটিকে রাম ভক্তির সুনামি তকমা দিয়েছেন। সোমবার, সেই সুনামির সাক্ষী রইল গোটা দেশ। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খোদ প্রধান যজমান হিসেবে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। তবে গত দেশে এদিন রাম দিবস পালিত হয়। আগামী মঙ্গলবার থেকেই সাধারণ পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে যাবে রাম মন্দিরের দরজা। আর সেদিন থেকেই ভক্তদের জোয়ার দেখা যাবে অযোধ্যায়, এমনটাই মনে করছে একটি ব্রোকারেজ সংস্থা। তাদের মতে, এবার রাম মন্দিরে আসা পর্যটকদের সংখ্যা ছাপিয়ে যাবে মক্কা ও ভ্যাটিকান সিটিকেও।
ব্রোকারেজ সংস্থা জেফারিজের অনুমান, প্রতি বছর অযোধ্যার রাম মন্দির দর্শনে গড়ে পাঁচ কোটি পর্যটক আসতে পারেন। আর এই সংখ্যাটা পৃথিবীর যেকোনো পর্যটন স্থলের থেকে বেশি। কারণ, এই সংস্থার তথ্য বলছে, অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে বছরে আনুমানিক ৩-৩.৫ কোটি মানুষ আসেন এবং তিরুপতি মন্দিরে আড়াই থেকে তিন কোটি দর্শনার্থী আসেন। এদিকে ভ্যাটিকান সিটিতে প্রতি বছর প্রায় ৯০ লক্ষ পর্যটক এবং সৌদি আরবের মক্কায় প্রায় দুই কোটি পর্যটক আসেন। আর এই সব সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাবে রাম মন্দিরে আগত পর্যটকদের সংখ্যা, এমনটাই মতামত তাদের।
আর এইসব কারণেই এবার অযোধ্যা নগরীর যাতায়াত ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাচ্ছে সরকার। কারণ, বর্তমানে ভারতের জিডিপি’র মাত্র ৭ শতাংশ আসে পর্যটন থেকে। সেটিকে বাড়ানোর জন্য রাম মন্দির দারুন একটি বিকল্প হতে চলেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই অযোধ্যার বিমানবন্দরের প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে বার্ষিক ১০ লক্ষ পর্যটককে পরিবহনের সুবিধা দিচ্ছে এই বিমানবন্দর। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে এই পরিবহন ক্ষমতা ৬০ লক্ষে পৌঁছাবে। সেই সঙ্গে রেল যোগাযোগকে উন্নীতকরণের মাধ্যমে এই সংখ্যা আরো বাড়ানো যাবে। একইসঙ্গে অযোধ্যায় এবার ৪০ টি ভালো মানের হোটেল তৈরি করা হচ্ছে। আর এই সব কাজ সম্পন্ন হলে বিশ্বের সবথেকে বড় পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে অযোধ্যা নগরী।