সোমবার রামরাজ্যে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন ঘটল ভগবান রামের। রামলালা রূপেই তিনি জন্মভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হলেন। রামলালার মূর্তিকে দেখলেই মনে হবে একটি বছর পাঁচেকের বালক। অবয়ব জুড়ে তার শৈশবের ছোঁয়া, চোখে শান্ত ভাব, মুখে স্মিত হাসি। সোমবার বেলা ১২ টা বেজে ২৯ মিনিটের মাহেন্দ্রক্ষণে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন পুণ্যস্নানের পরেই গর্ভগৃহে রাজবেশে সাজানো হয় রামলালা মূর্তিকে। তারপর শাস্ত্রমতে অর্ঘ্য দানের মাধ্যমে মূর্তিতে প্রানের প্রতিষ্ঠা করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।
তবে এই রামলালার মূর্তি অবাক করছে গোটা বিশ্বকে। কারণ একই মূর্তিতে বিশ্বভুবনকে তুলে ধরা হয়েছে। এই অনন্য শিল্পকর্ম নির্মাণ করেছেন মাইসোরের শিল্পী অরুণ যোগীরাজ। এটি মূলত কষ্টিপাথর বা শ্যাম শিলা দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছে। এই শিলার বয়স হাজার বছর। এটি জল প্রতিরোধী। অর্থাৎ, জল ও দুধে স্নান করানো হলেও মূর্তির কোনো ক্ষতি হবেনা। একইসঙ্গে সেই স্নান জল খাওয়া হলে, তাও কোনো ক্ষতি করবে না। পা থেকে কপাল পর্যন্ত মূর্তির মোট উচ্চতা ৫১ ইঞ্চি। প্রতিমার ওজন প্রায় ২০০ কেজি। মূর্তির উপরে একটি মুকুট শোভা পাচ্ছে। রামের হাত হাঁটু পর্যন্ত লম্বা। চোখ দুটো বড়। কপাল বড় বড়। মূর্তিটি পদ্ম পুকুরের উপর দাঁড়িয়ে আছে। রামলালার হাতে তীর-ধনুক।
তবে এই মূর্তির আরো বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। যেমন, এই বিগ্রহে একসাথে স্থান দেওয়া হয়েছে ভগবান বিষ্ণুর ১০টি অবতারকে। মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নরসিংহ, বামন, পরশুরাম, রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ এবং কল্কি অবতার রয়েছে রামলালার মূর্তির চারপাশে। এছাড়াও মূর্তির শীর্ষে রয়েছেন সূর্যদেব। এছাড়াও মূর্তিটিতে সূর্য, ওম, গণেশ, চক্র, শঙ্খ, গদা, স্বস্তিক এবং হনুমানের মূর্তি রয়েছে। এছাড়াও মূর্তিটিতে হনুমান ও গরুড়ও রয়েছেন। রামলালার পাদদেশে স্থান দেওয়া হয়েছে তার সবথেকে বড় দুই ভক্তকে।
সোমবার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন রামলালার মূর্তিকে এক অনন্য সাজে সাজানো হয়। নানারকম ফুল ও গয়না দিয়ে সাজানো হয় মূর্তিকে। হিরে মানিক ছাড়াও এদিন রামের হস্তে দেওয়া হয় সোনার তৈরি টির ও ধনুক। এই মূর্তি থেকে বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার আভাস স্পষ্টভাবে দেখা যায়। যা প্রথম দর্শনেই রাম ভক্তদের আকৃষ্ট করে। ভগবান রামের কপালে লাগানো তিলক সনাতন ধর্মের মাহাত্ম্যকে প্রকাশিত করে।