মাতৃত্ব হল পৃথিবীর সবথেকে সুন্দরতম অনুভূতি বা সম্পর্কের মধ্যে অন্যতম। মাতৃত্বের সুখ যেমন পৃথিবীর প্রতিটি নারী চায়, তেমনই মাতৃত্ব দিয়েই গড়ে ওঠে এক অদৃশ্য অথচ অটুট বন্ধন। আর এই মাতৃত্বের ক্ষেত্রে অর্থাৎ, কোনো মহিলার সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা বা বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল যমজ সন্তান বা টুইন বেবি। কিন্তু কেন যমজ সন্তান হয়? কেনই বা একই গর্ভে একজোড়া সন্তানের গঠন হয়? হয়তো এখনো অনেকেই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। তবে এই নিবন্ধে জেনে নিন বিষয়টি সম্পর্কে।
মূলত শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে এলে একজন নারীর ঋতুস্রাব শুরু হয়। আর সেই কারণে প্রতি মাসে তার ডিম্বাশয়ে একটি করে ডিম্বাণু পরিপক্ক হয়। এই ডিম্বাণু সাধারণত দুই মাসিকের মাঝামাঝি সময়ে ডিমের থলি থেকে ডিম্ববাহী নালীতে আসে। এই সময়ে যদি শারীরিক সঙ্গম হয়, তাহলে পুরুষের শুক্রাণু ডিম্ববাহী নালীতে গিয়ে ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হবার ফলে ভ্রুণ তৈরি হয়। একে গর্ভধারণ বলে। এই ভ্রুণ কয়েক দিন পর জরায়ুতে এসে পৌঁছে এবং সেখানে বড় হয়ে শিশুতে পরিণত হয়। এভাবেই একজন নারীর শরীরে মাতৃত্বের সূচনা ঘটে। আর এই পদ্ধতির মাঝেই গঠিত হয় যমজ সন্তান। যমজ মূলত দুই ধরণের হয়- ‘আইডেন্টিক্যাল’ ও ‘নন-আইডেন্টিক্যাল’। এবার এই দুটিকে আলাদা ভাবে জেনে নেবো।
● আইডেন্টিক্যাল যমজ: গর্ভধারণ প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে ডিম্ববাহী নালিতে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনের ফলে জাইগোট তৈরি হয়। সেই জাইগোট জরায়ুতে যাওয়ার সময় অনেক কারণে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। সেই কারণে দুটি ভ্রূণ হিসেবে সেগুলি বড় হতে থাকে। আর এভাবেই জন্ম হয় আইডেন্টিক্যাল যমজ সন্তানের। এই ধরণের যমজ সাধারণত একইরকম দেখতে হয়। একইসঙ্গে এই ধরণের যমজ দুটি মেয়ে বা দুটি ছেলে হয়।
● নন-আইডেন্টিক্যাল যমজ: অনেক সময় নারীদের অভ্যুলেশনের সময় একটির পরিবর্তে একজোড়া ডিম্বাণু বেরিয়ে আসে। এবার সেই দুটি ডিম্বাণু দুটি শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হয়ে একজোড়া ভ্রূণ গঠন করে। জরায়ুতে আলাদাভাবে দুটি ভ্রূণের বিকাশ হয়। আর এভাবেই নন-আইডেন্টিক্যাল যমজ সন্তানের জন্ম হয়। এই যমজ সন্তান সাধারণত বিপরীত লিঙ্গের হতে পারে। তবর এরা একইরকম দেখতে নাও হতে পারে।