বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মানুষজন যে রোগগুলি নিয়ে সবথেকে বেশি চিন্তিত থাকেন, তার মধ্যে অন্যতম হল ডায়াবেটিস। আগে বয়স বাড়লে এই রোগের প্রকোপ দেখা যেত শরীরে। তবে আজকাল কম বয়স্ক মানুষরাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আসলে ডায়াবেটিস হল শরীরের এমন একটি গুরুতর অবস্থা, যখন আমাদের শরীর নিজে থেকে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা তৈরি হওয়া ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না। এর ফলে রক্তে শর্করার বা গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়। ডায়াবেটিস-জনিত ইনসুলিনের তারতম্যের জন্য আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রার তারতম্য ঘটে। শরীরে বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। ফলস্বরূপ অনেক সমস্যা দেখা যায় আমাদের শরীরে।
এখন মানুষের মধ্যে দুই ধরণের ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। একটি হল টাইপ-১ ডায়াবেটিস, অন্যটি হল টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এছাড়াও অন্যান্য ধরণেরও ডায়াবেটিস হতে পারে শরীরে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, নিওনাটাল ডায়াবেটিস, জেসটেসানাল ডায়াবেটিস ইত্যাদি। তবে যে ধরণের ডায়াবেটিস হোক না কেন, এই রোগ হলেই মেনে চলা উচিত বেশ কিছু নিয়ম। যেমন ডায়াবেটিস হলে যেসব খাদ্য বা পানীয়তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে সেসব বর্জন করতে হবে। একইসঙ্গে ভাজা খাবার, তৈলাক্ত খাবার এবং ফাস্ট ফুড বর্জন করা উচিত। তবে ডায়াবেটিসের প্রভাব বাড়লে সেক্ষেত্রে ইনসুলিন নিতে হয়।
এসবের পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা, ব্যায়াম করা এবং ওজন কমানোর উপর জোর দেন। এক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হল হাঁটাহাঁটি। মূলত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবার খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে অনেক উপকার মিলবে। রকদিকে যেমন খাবার খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করলে হজম ভালো হয়, তেমনই আবার এর ফলে খাবারে থাকা শর্করা বা গ্লুকোজ রক্তে বেশি পরিমাণে মিশতে পারেনা। তাই যেকোনো ধরণের ডায়াবেটিক রোগীর জন্য খাবার খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার খাওয়ার পর একটু হাঁটাহাঁটি করলে রক্তে শর্করার মাত্রা সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় অনেকটা। একইসঙ্গে এই অভ্যাস থাকলে ইনসুলিন ভালোভাবে কাজ করে শরীরে। এমনকি অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে মিনিট পাঁচেক হাঁটাহাঁটি করলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই যারা ইতিমধ্যে এই রোগে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে খাওয়ার পর হাঁটা অত্যন্ত জরুরি। তবে যারা প্রি-ডায়াবেটিক স্টেজে রয়েছেন, তারাও এই অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাহলে ডায়াবেটিসের কারণে শরীরে ক্ষতি হবে কম।