সনাতন হিন্দু ধর্মে বিভিন্ন গাছ, পশু পাখিকে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বট, অশ্বত্থ প্রভৃতি গাছকে দেবতা হিসেবে পুজো করা হয়। তেমনই একটি গাছ হল তুলসী। ভগবান বিষ্ণুর ঘনিষ্ঠ বলে ধরা হয় তুলসীকে। তাই বিষ্ণুর পায়ে তুলসী দিয়ে পুজো করা হয়। অন্যদিকে তুলসীগাছে রোজ জল দিলেও বাড়িতে বিষ্ণুর বাস হয় বলে মনে করেন অনেকেই। একইসঙ্গে তুলসী গাছের যত্ন ও উপাসনা করলে ভগবান বিষ্ণুর কৃপালাভ হয় বলেও মনে করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
ভারতের অন্যতম প্রাচীন শাস্ত্র বাস্তুশাস্ত্রে তুলসীর পরিচর্যা নিয়ে নানা নিয়ম বর্ণিত আছে। এছাড়াও তুলসী গাছের নানা ইঙ্গিত যে কিভাবে আমাদের জীবনের আসন্ন সময়কে ব্যক্ত করে, তাও উল্লিখিত আছে সেখানে। বাস্তুবিদদের মতে কিছু কিছু ইঙ্গিত যেমন বাড়ির ঘোর অমঙ্গলের জানান দেয়, তেমনই আবার কিছু ইঙ্গিত দেখলেই আমাদের বুঝতে হতে হবে যে আমাদের জীবনে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হতে চলেছে। যেমন আচমকা তুলসী গাছের পাতার রং ঘন ও উজ্জ্বল সবুজ রংয়ের হয়ে গেলে বুঝতে হবে সেই বাড়িতে মা লক্ষ্মীর কৃপা বর্ষিত হবে কিছুদিনের মধ্যে। এছাড়াও তুলসী গাছের পাশেই যদি সেটি মাটিতে দুর্বা ঘাস জন্মাতে দেখা যায়, সেটিকেও শুভ ইঙ্গিত বলে মনে করা হয়।
তবে এসবের পাশাপাশি তুলসী গাছে মঞ্জরীর আগমন নিয়েও বাস্তুশাস্ত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে প্রকাশ করা হয়। এসলস তুলসী গাছে পাতার পাশাপাশি সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন হল তুলসী গাছের মঞ্জরী। কিন্তু সবসময় এটি দেখা যায়না। তবে আচমকা গাছে কচি মঞ্জরী দেখা দিলে বুঝতে হবে সেই বাড়ির উপর প্রসন্ন হয়েছেন ভগবান বিষ্ণু। তাই সেই বাড়িতে সুসময় আসন্ন। এমনটা হলে খুলে যায় অর্থ ভাগ্য। ফলস্বরূপ নানা বাধা ও বিপত্তি কেটে গিয়ে জীবনের উন্নতি শুরু হয়।
তবে শুধুমাত্র মঞ্জরী দেখেই আনন্দিত হয়ে উঠলে চলবে না। কারণ ওই মঞ্জরী কিছুদিন পরেই ঝরে যায়। তাই মঞ্জরীর প্রভাবে যে সুসময় আসে, তা ধরে রাখতে শুকনো মঞ্জরীর দানা বা গোটা মঞ্জরীকে একটি লাল কাপড়ে বেঁধে রাখুন ঠাকুর ঘরে। তবে এক্ষেত্রে সঠিক দিকে সেটিকে রাখতে হবে। তুলসী মঞ্জরীকে লাল কাপড়ে মুড়ে সবসময় ঠাকুর ঘরের পূর্ব দিকে রাখুন। এতে বাড়িতে সুখ ও সমৃদ্ধির জোয়ার বইবে। এছাড়াও স্নানের জলে তুলসী মঞ্জরী ফেলে সেই জলে স্নান করলে সমস্ত গ্রহদোষ কেটে যায়।
Disclaimer: প্রতিবেদনটি তথ্য ও অনুমানের উপর লিখিত। বাস্তব জীবনে ব্যক্তিবিশেষে এর প্রভাব ভিন্ন হতে পারে।