দেখতে দেখতে শীতকালের সমাপ্তি ঘটেছে বঙ্গে। ধীরে ধীরে বসন্তের সগমন ঘটছে এবার। প্রকৃতির অন্তত তেমনটাই জানান দিচ্ছে। একদিকে যেমন দিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনই বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য। গাছে গাছে নতুন পল্লবের সঙ্গে দেখা দিচ্ছে শিমুল ও পলাশের মতো ফুল। একইসঙ্গে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালীন নানা ফলের আবির্ভাব ঘটছে বাজারে। আর গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে অন্যতম হল লিচু। বাংলার নানা বাজারে সাধারণত গ্রীষ্মকালেই লিচুর দেখা মেলে। আর গরমের দিনে বিকেলে লিচুর জলভরা সাঁসে কামড় দিতে কেই না পছন্দ করে।
তবে লিচু শুধুমাত্র সুস্বাদুই নয়, লিচুর মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারী উপাদান, যা আমাদের শরীরের নানা অংশে নানাভাবে কাজে লাগে। লিচুতে অনেক স্বাস্থ্যকর খনিজ, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই ফলে পাওয়া যায় রুটিন, এপিকেটেচিন, ভিটামিন সি, কপার, পটাসিয়াম ইত্যাদি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি। এর সাথে এই ফলে থাকে বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ। সব মিলিয়ে লিচু ক্যান্সার থেকে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস থেকে হজমের সমস্যার সমাধান করে দিতে সক্ষম। তাই গ্রীষ্মকালে সকলের লিচু খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বাজারে এই ফলের যা দাম, তাতে অনেকেই লিচু কিনে খেতে পারেন না। তবে তারা বাড়িতে গাছ লাগাতে পারেন। সেই নিয়েই আলোচনা করা হল নিবন্ধের বাকি অংশে।
লিচু গাছ হল একটি চিরহরিৎ গাছ। এটি সাধারনত ১৫ মিটারের বেশি লম্বা হয় না। তবে কখনো কখনো এই গাছ ২৮ মিটার পর্যন্তও লম্বা হয় হয়ে থাকে।এই গাছের বাকল হয় কালচে ধূসর রংয়ের এবং এই গাছের শাখাগুলি হয় লালচে বাদামী রঙের। তবে এই গাছের পাতার রং চিরসবুজ হয়। তাই এগুলিকে লরোফিল বা লরয়েড পাতা বলা হয়। তবে বর্তমানে এই গাছের বেশ কিছু উন্নতমানের প্রজাতি বাজারে এসেছে, যা খুব অল্প দিনেই বেড়ে উঠবে এবং ফলন দেবে। তাই এই সময় লিচু গাছ লাগানো হলে কয়েকমাসের মধ্যেই তার ফলন মিলবে।
বর্তমানে বাজারে উললব্ধ বোম্বাই ও আতা বোম্বাই জাতের লিচু গাছ কিনে বাড়িতে লাগাতে পারেন। এই গাছ খুব বড় হয়না। উচ্চতায় এটি ৮ ফুটের বেশি লম্বা হয়না। তবে এই মাঝারি আকৃতির গাছেই ফল ধরে। কারণ ইতিমধ্যে, টবে রাখা এই গাছে ফুল দেখা দিচ্ছে। সেগুলি থেকেই গ্রীষ্মের সময়ে ফল পাওয়া যাবে। বকর্তমান বাজারে এই দুই জাতের লিচু গাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ টাকা থেকে ২৫০ টাকা প্রতি পিস দামে।