আজকালকার দিনে ইলেকট্রিক ছাড়া আমাদের জীবনকে কল্পনা করাটাও যেন অসম্ভব একটি বিষয়। কারণ ইলেকট্রিক থেকেই এখন সবকিছু চলে। যাতায়াতের রেল থেকে নিত্যদিন ব্যবহারের মোবাইল চার্জ, সবকিছুর জন্যই আবশ্যিক একটি জিনিস হল ইলেক্ট্রিসিটি। এদিকে ভারতের মোটামুটি সব প্রান্তেই এখন ইলেকট্রিক সংযোগ সম্পুর্ন হয়েছে। ফলে রাত নামলেই দেশের প্রত্যন্ত যেসব গ্রামে আগে নেমে আসতো নিকষ কালো অন্ধকার, সেখানেও আজ জ্বলছে বৈদ্যুতিক বাতি।
কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে আমাদের আশপাশে থেকেই যায় বৈদ্যুতিক তারের জটলা। এখনও শহরে মাথার উপর ইলেকট্রিক তারের ছড়াছড়ি দেখা যায়। এটি যেমন শহরের মধ্যে দৃষ্টিকটুতা বাড়িয়ে, দেয় তেমনই এই তার থেকে ঘটে নানা দুর্ঘটনা। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে নানা ধরনের ছোট-বড় দুর্ঘটনা, এমনকি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তবে এবার এই সমস্যা থেকে মিলতে চলেছে পরিত্রাণ। তার ছাড়াই এবার ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের মতো বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে নির্দিষ্ট স্থানে। কিন্তু সেটি কিভাবে সম্ভব? তা এবার জেনে নিন।
জানা গেছে, মাইক্রোওয়েভ বিমের মাধ্যমে এমনটা করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে একটি তামার তারের কুণ্ডলী থেকে আরেকটি কুণ্ডলিতে পরস্পরের সংযোগ ছাড়াই বিদ্যুৎ পরিবহন করা যায়। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলা হয় তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ। বর্তমানে ট্রান্সমিটার তৈরি করেছেন যা সারা বাড়িতে এ আবেশ ছড়াবে। আর এই তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ ঘরে অবস্থিত মানুষ-আসবাবপত্র ইত্যাদিতে এর কোনো প্রভাবই পড়বে না। একমাত্র যেসব প্রয়োজনীয় বস্তুতে থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা, কেবল সেগুলোই ওই চুম্বকীয় আবেশ গ্রহণ করবে।
সম্প্রতি, এই বেতার বিদ্যুৎ পরিবহনের একটি পরীক্ষা করা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। জানা গেছে, ইউনাইটেড স্টেট নেভাল ল্যাবরেটরি থেকে ১.৬ কিলোওয়াট শক্তির একটি নতুন কেএম ইউনিটকে সম্প্রতি পাঠানোর চেষ্টা করা হয় মেরিল্যান্ডে। আর এই পরীক্ষায় সফলতা মিলেছে বলে জানা গেছে। যে উপায় ১৫০ বছর আগে বিজ্ঞানী টেসলা চেষ্টা করেছিলেন, তা এবার বাস্তবায়নের পথে। জানা গেছে, অদূর ভবিষ্যতে এই বেতার বিদ্যুৎ পরিবহন ব্যবস্থা পৌঁছে যাবে পৃথিবীর কোণায় কোণায়। এর ফলে কমে যাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের খরচও। সেদিন হয়তো আর দূরে নয়, যেদিন মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের মতো দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে সহজেই পৌঁছে যাবে বিদ্যুৎ।