দুই পুরুষের মালাবদল কিংবা দুই মহিলার সিঁদুরদান, দুটি ঘটনাই আমাদের সাধারণ সমাজের সঙ্গে খাপ খায়না সহজে। শুধুমাত্র পুরুষ ও মহিলার সম্পর্ককেই স্বীকৃতি দেয় সমাজের সিংহভাগ মানুষ। তবে দুই পুরুষের প্রেম কিংবা দুই নারীর অন্তরঙ্গ সম্পর্ককে সেভাবে মেনে নেওয়া হয়না। তাও এই বিষয়টি রয়ে গেছে সমাজের মধ্যেই। তাই হয়তো আজো অনেকেই সমাজের প্রথা ভেঙে সমকামী বিয়ের পথে পা বাড়ান। কিন্তু সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখানো গেলেও আইন ছাড়া কোনো পদক্ষেপ সেভাবে গুরুত্ব পায়না। তাই দীর্ঘদিন ধরেই সমকামী বিয়ের আইনি স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছেন অনেক যুবক যুবতী।
আর এবার এই আইনে স্বীকৃতি মিললো একটি দেশে। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর অবশেষে সমলিঙ্গ বিবাহে অনুমতি দেওয়া হল আদালতের তরফে। এবার থেকে সেই দেশে দুজন পুরুষ কিংবা দুজন নারী শুধুমাত্র নিজেদের পছন্দের ভিত্তিতে বিয়ে করতে পারবেন। শুধুমাত্র বিয়ে নয়, একইসঙ্গে দুজন সমলিঙ্গ যুগল দত্তক নিয়ে সন্তানও মানুষ করতে পারবেন, এই নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের আদালত। আর এই নিয়ে সেদেশে যেমন সমলিঙ্গ মানুষদের মধ্যে খুশির পরিবেশ, তেমনই আবার অনেকেই এটির বিরোধিতা করছেন।
এখন প্রশ্ন হল যে কোন দেশে এই নতুন আইন চালু হল? সম্প্রতি, সমকামী বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দিল ইউরোপের দেশ গ্রিস। খ্রিস্টান অর্থোডক্স সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রথম দেশ হিসেবে এই বিষয়টি আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে গ্রীসে। বৃহস্পতিবার, গ্রিসের পার্লামেন্টে এই বিষয়ে নতুন আইন পাশ হল। সেই সঙ্গে ঘোষণা করা হল যে এই নতুন আইন দেশের মধ্যে অনেক বৈষম্যকে দূর করে দিতে সক্ষম হবে। একইভাবে, দেশের অনেক মানুষ এতে স্বাধীনভাবে নিজের জীবনকে গড়ে তুলতে পারবেন।
তবে এই বিল গ্রিসের পার্লামেন্টে পাশ হওয়ার পরেই খ্রিস্টান অর্থোডক্স চার্চের তরফে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। আর এই ছবিটা ধরা পড়ে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের বুকেই। সেখানের সিনটাগমা স্কোয়ারে বাইবেলের পাঠ করে প্রতিবাদ জানানো হয়। একইসঙ্গে এই বিষয়টির বিরোধিতা করে অর্থোডক্স চার্চের প্রধান আর্চ বিশপ আইরনিমোস বলেন যে এই ব্যবস্থা দেশের সামাজিক ব্যবস্থাকে কলুষিত করবে। অন্যদিকে এর স্বপক্ষে অনেকেই আবার সাতরঙা পতাকা উড়িয়ে উল্লাস করেন। সব মিলিয়ে গ্রীসে এই আইনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল।