ভারতের প্রতিটি নাগরিক, যারা নিয়মিত সরকারি বা বেসিরকারী কোনো সংস্থা থেকে উপার্জন করেন, তখন তাদের আয়কর রিটার্ন ফাইল করা বাধ্যতামূলক। আয়কর রিটার্ন হল একটি নির্ধারিত ফর্ম যার মাধ্যমে একটি আর্থিক বছরে এক জন ব্যক্তি তাঁর অর্জিত আয়ের বিবরণ জমা দিতে পারেন। এই ধরনের আয়ের উপর প্রদত্ত করের তথ্য আয়কর বিভাগে জানানো হয়। আর এভাবেই দেশের অর্থমন্ত্রকের খাতায় নাম তুলতে পারেন দেশের যেকোনো নাগরিক।
ইতিমধ্যে গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবর্ষ। আর বছরের শুরুতেই বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে আয়কর দফতর। কারণ গত অর্থবর্ষ অর্থাৎ, ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে অনেক করযোগ্য নাগরিক আয়কর রিটার্ন ফাইল করেননি। আর এই সংখ্যাটা এক কোটির বেশি। অর্থাৎ, অনেকেই রয়েছেন যারা টিডিএস কাটার আগে আয়কর রিটার্ন ফাইল প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ন করেনি। র্বার সেইসব করদাতাদের থেকে এর জন্য জবাব চাইবে আয়কর দফতর। জানা গেছে, এই জবাবদিহিতার প্রক্রিয়া চালু হবে আগামী ১৫ ই এপ্রিল।
গত অর্থবর্ষে কি কারণে এত ব্যক্তি করযোগ্য হয়েও টিডিএস কাটার পর আয়কর রিটার্ন ফাইল করেননি সেই কারণটিও খতিয়ে দেখবে আয়কর দফতর। যদি আয়কর দফতরের প্রকাশিত তথ্যের দিকে নজর দেওয়া যায়, তাহলেই বিষয়টি আরো বেশি স্পষ্ট হবে। আয়কর দফতর জানিয়েছে যে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে মোট প্রায় ৮ কোটি ৯০ লক্ষ করদাতা ছিলেন দেশে। তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৭ কোটি ৪০ লক্ষ করদাতা আয়কর রিটার্ন ফাইল করেছেন। এর মধ্যে আবার রিভাইজড রিটার্নও রয়েছে। তাই ১ কোটি ৯৭ লক্ষ করদাতা কিন্তু রিটার্ন ফাইল করেননি। তাই এবার তাদের থেকে এর জন্য জবাব চাইবে আয়কর দফতর।
উল্লেখ্য, এই আয়কর রিটার্ন কিন্তু অনেক কাজে লাগে। যেকোনো লোন নিতে গেলে অন্তত ৩ থেকে ৫ বছরের আয়কর রিটার্ন ফাইল দেখাতে হয়। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে লোন নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলে এবছর আয় শুন্য হলেও আয়কর রিটার্ন ফাইল করে রাখা উচিত। এছাড়াও বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন ফাইল কাজে লাগে। যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং কানাডায় ভ্রমণের আগে সেখানের ভিসা পেতে হলে যেকোনো রকম আর্থিক তছরূপ রাখা চলে না। সেক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন ফাইল একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি হতে পারে। তাই সকলের জন্য আয়কর রিটার্ন ফাইল করা গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।