নিজের রোজগারের টাকা সঞ্চয় করতে কেই না চায়। আর তার সাথে যদি পাওয়া যায় জীবনবিমা, সঙ্গে ভালো হারে রিটার্ণের অঙ্ক, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু বর্তমানে আর্থিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য সংস্থার উপর তেমন ভরসা করেন না নাগরিকরা। কারণ অবশ্য একটাই, ভুঁইফোড় সব চিটফান্ড। তবে এবার সেসব ঝুঁকি ছাড়াই ভারতীয় ডাকবিভাগ নিয়ে এল আকর্ষণীয় একটি সঞ্চয় ও বিনিয়োগের ব্যবস্থা। এই স্কীমে আপনি আপনার ইচ্ছে ও সামর্থমতো টাকা জমা করতে পারবেন। আর তার জন্য আপনাকে যে সুদ দেওয়া হবে, সেই পরিমান সুদ হয়তো আপনাকে কোনো ব্যাঙ্ক দেবে না।
ভারতীয় ডাকবিভাগের আকর্ষণীয় এই ব্যবস্থাটি হল রেকারিং ডিপোজিট একাউন্ট। এই প্রকল্পের সাহায্যে আপনি একটি নিরাপদ বিনিয়োগ করতে পারবেন এবং ম্যাচিউরিটির সময় প্রচুর লাভ করতে পারবেন। আপনি আপনার বাড়ীর সামনের যে কোন পোস্ট অফিস থেকে এই প্রকল্প গ্রহণ করতে পারেন। ভারতের যেকোনো ব্যক্তি এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এছাড়া নিজের স্বামী অথবা স্ত্রীর সাথে যৌথ একাউন্টও খোলা যায় এখানে। যদি কেউ নাবালক হন তাহলে তার অভিভাবকের পক্ষ থেকে একাউন্ট খোলা যেতে পারে। তবে যদি সেই নাবালকের বয়স ১০ বছরের বেশি হয় তাহলে সে তার নিজের নামে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে।
এটি মূলত একটি স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ। একজন বিনিয়োগকারী এই পোস্ট অফিস রেকারিং ডিপোজিট একাউন্ট ৫ বছরের জন্য খুলতে পারেন। তবে এর থেকে কম সময় অর্থাৎ একেবারে অল্প সময়ের জন্য কিন্তু এই অ্যাকাউন্ট আপনি খুলতে পারবেন না। এই একাউন্টে মাসে মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করা যায়। এই প্রকল্পে প্রতি মাসে বিনিয়োগের পরিমাণের বিশেষ কোন সীমা নেই। আপনি যত ইচ্ছা টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনাকে প্রতিমাসে কিন্তু পেমেন্ট করতে হবে। যদি আপনি সেই টাকা পেমেন্ট করতে না পারেন তাহলে কিন্তু আপনার সমস্যা হতে পারে।
প্রতি তিন মাস অন্তর জমা করা টাকার উপর সুদ দেয় এই বিশেষ ব্যবস্থা। তিন মাসের শেষে আপনার একাউন্টে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ জমা করা হবে পোস্ট অফিসের তরফ থেকে। এই পোস্ট অফিস রেকারিং ডিপোজিট প্রকল্পে আপনি ৬.২ শতাংশ হারে সুদ পেয়ে যাবেন। এই স্কিমে সুদের হার বাড়ানো হয়েছে ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে। অর্থাৎ যদি আপনি প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে এই অ্যাকাউন্টে জমা করেন তাহলে সেই হিসেবে দেখতে গেলে প্রতি বছরে আপনি বিনিয়োগ করছেন ৬০ হাজার টাকা। সেই নিরিখে যদি ৬.২ শতাংশ করে আপনি বার্ষিক সুদ পান তাহলে পাঁচ বছর পর আপনি ৩.৫৮ লক্ষ টাকা পেয়ে যাবেন। ১০ বছর পর সেখানে আপনি রিটার্ন পাবেন ৮.৩২ টাকা।