আশি-নব্বইয়ের দশকের যেকোনো পুরুষকে জিজ্ঞেস করলে তাদের প্রিয় অভিনেত্রীর তালিকায় একটি নাম কমন থাকত, আর সেটি হল রেখা। রুপোলি পর্দার সুন্দরী রেখা তখন পুরুষদের মনে দাবানলের সঞ্চার ঘটাতে সিদ্ধহস্তা ছিলেন। একের পর এক হিট ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। সৌন্দর্যের পাশাপাশি নিজের অভিনয় দিয়েই তিনি জয় করেছিলেন ভক্তদের মন। তবে এই অভিনেত্রী নামের পাশে কেন কোনো পদবী লেখেন না, এই প্রশ্ন হয়তো তার অনেক ভক্তের মনেই রয়েছে। তবে এর কারণটি বেশ করুণ, যা শুনলে আপনার চোখও ভিজে আসবে।
ভক্তদের কাছে রেখে নামে পরিচিত হলেও অভিনেত্রী লের আসল নাম ছিল ভানুরেখা গণেশন। ১৯৫৪ সালের ১০ অক্টোবর তিনি মাদ্রাজে জন্মগ্রহণ করেন তামিল চলচ্চিত্র অভিনেতা জেমিনি গণেশন ও তেলুগু অভিনেত্রী পুষ্পাভ্যাল্লীর ঘরে। তবে ছোট থেকেই বাবাকে সেভাবে দেখেননি রেখা। তার অন্যতম কারণ হল এটাই যে রেখার বাবার আরো অন্য সন্তান সন্তটি ছিল। এই কারণেই রেখার মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া দুই কন্যা সন্তানকে তিনি কখনোই নাকি সেভাবে মেনে নিতে চাননি। তাই বাবার স্নেহ ছাড়াও বড় হয়েছেন অভিনেত্রী। সেই কারণেই হয়তো তিনি নিউজের নামের পাশে বাবার পদবী কোনদিনই রাখতে চাননি।
তবে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে রেখার রিল জীবনের প্রেম বাস্তব জীবন অব্দি যে গড়িয়েছিল, তা নিয়ে এখনো যথেষ্ট চর্চা হয়। একবাক্যে দুজনের কেউ স্বীকার না করলেও অনেক সংবাদমাধ্যমে সেই খবর চাউর হয়েছিল সেই সময়। শুধু সেই সময় নয়, আজও চর্চা হয় রেখা-অমিতাভের প্রেমের কাহিনীকে ঘিরে। অভিনেত্রী রেখা একাধিকবার এই সম্পর্ক প্রসঙ্গে নানা ইঙ্গিতপূর্ণ কথাবার্তা বলেছেন। আক্ষেপের সুরে তিনি কয়েকবার এও বলেছেন যে বচ্চন সাহেব বিবাহিত হওয়ার কারণে নাকি পরিণতি পায়নি এই সম্পর্ক। এছাড়াও এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, একটা সময় ভয়ঙ্করভাবে বিগ-বি’র প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। সেই সময় নাকি অভিনেতার সবকিছু ভালো লাগতে শুরু করে তার। পাগল হয়ে যান তিনি অমিতাভের প্রেমে।
শুধুমাত্র অমিতাভ নয়, রেখার জীবনে প্রেম এসেছে একাধিকবার। রেখা ১৯৯০ সালে দিল্লীর প্রখ্যাত শিল্পপতি মুকেশ আগারওয়ালের সঙ্গে লুকিয়ে বিয়ে করেন। এক বছর পর যখন রেখা অমেরিকাতে তখন মুকেশ কয়েকবার চেষ্টার পর আত্মহত্যা করেন এবং চিরকুটে লিখে যান কারো কোন দোষ নেই। এর অগে ১৯৭৩ সালে মিডিয়াতে খবর রটে রেখা অভিনেতা বিনোদ মেহরাকে বিয়ে করেছেন, কিন্তু ২০০৪ সালের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সীমী গরেওয়াল এর সাথে কথোপকথনের সময় রেখা মেহরাকে বিয়ে করার কথা নাকচ করে দেন এবং তাকে একজন শুভাকাঙ্খী হিসেবে উল্লেখ করেন। এর পর আবার পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইমরান খানের প্রেমে পড়েন অভিনেত্রী। ১৯৮৫ সালের ১১ জুন স্টার পত্রিকায় দাবি করা হয় যে তারা নাকি বিয়েও করতে চলেছেন। যদিও উড়ে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর রেখা আজো থাকেন নিজের মতো, নিজের কাছে, নিজের হয়ে।