শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অদূর অতীতে অনেক দুর্নীতি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তবে এর মাঝেও শিক্ষক বা শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। যদিও এখন শিক্ষকতার চাকরি পাওয়া মুখের কথা নয়। কারণ আজকাল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে হলে তার আগে প্রশিক্ষণমূলক কোর্স করা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকা হওয়ার জন্য ডি.এল.এড কোর্স করতে হয়। এছাড়া, উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষিকা হওয়ার জন্য বি.এড কোর্স করতে হয়। এসব কোর্স করেও অনেকে চাকরির আশায় বসে রয়েছেন।
সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একটি সুখবর এসেছে রাজ্য সরকারের তরফে। জানা গেছে, শীঘ্রই রাজ্যের স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে। সামনেই যেহেতু লোকসভা ভোট, আর নিয়োগ ইস্যুতে অনেকটা কোণঠাসা তৃণমূল, সেই কারণেই এবার ভোটের আগে নিয়োগ নিয়ে ভাবতে চলেছে রাজ্যে শাসক দল। জানা গেছে, শীঘ্রই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে তৈরি হওয়া প্রধান শিক্ষকের শুন্যপদের বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে। এই মর্মে বিকাশ ভবনে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক ও শিক্ষিকা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। সেই নিয়োগ হয়েছিল ২০১৯ সালে। তারপর থেকে পাঁচ বছর বেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো শিক্ষক ও শিক্ষিকা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি রাজ্য। সেই কারণেই রাজ্যের সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে বেড়েছে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকার শুন্যপদের সংখ্যা। জানা গেছে, সব মিলিয়ে রাজ্যে মোট ৪,৫০০ পদ খালি হয়েছে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকার জন্য।
এই মর্মে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “আমি শুনেছি কাজ প্রায় শেষের মুখে, সরকারের তরফ থেকে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করলেই আমরা দ্রুত প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকা নিয়োগের পরীক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করব।” এদিকে এই বিষয় নিয়ে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাষ্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতির জানান, “সারা রাজ্যে প্রায় 50 শতাংশের বেশি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক- শিক্ষিকা নেই। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে নিয়োগের পথে হাঁটছে সরকার। তবে বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা নয়, স্কুল সার্ভিস কমিশন যেন পরীক্ষা নেয়, আমাদের এটাই প্রধান দাবি ছিল। প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পর যে সমস্ত শিক্ষক পদ ফাঁকা হয়ে যাবে সেগুলো দ্রুত নিয়োগ করতে হবে। তা না হলে শিক্ষার ভারসাম্য নষ্ট হবে।”