কয়েকদিন আগেই আরব সাগরে অবস্থিত ভারতের কেন্দ্রশাসিত লাক্ষাদ্বীপে ঘুরতে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানের বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেন সামাজিক মাধ্যমে। এরপরই মোদী এবং ভারতকে নিয়ে আপত্তিকর কিছু মন্তব্য করেছিলেন মালদ্বীপের তিনজন মন্ত্রী। এতে রেগে যায় ভারতের জনগন। দেশের অপমান করার কারণেই বয়কট মালদ্বীপ ট্রেন্ড সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। বাস্তবেই অসংখ্য ভারতীয় মালদ্বীপের হোটেলগুলির বুকিং বাতিল করে। ভারতের একাধিক পর্যটন সংস্থাও এই আন্দলনের পথে হাঁটে। ভারতের তাবড় শিল্পপতি, ক্রিকেটাররা মালদ্বীপের বয়কটের ডাক দেন।
আর এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে চরম সংকটে পড়েছে মালদ্বীপ। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার প্রভাব ভালোভাবে পড়তে চলেছে মালদ্বীপের মানুষের জনজীবনে। কারণ, মালদ্বীপের মোট GDP-র ২৮ শতাংশের বেশি আসে পর্যটন থেকে। আর মালদ্বীপের এই পর্যটনকে অনেকাংশে বাঁচিয়ে রেখেছে ভারত। কারণ, বাকি সব দেশের থেকে ভারতের বেশি মানুষ ঘুরতে যান মালদ্বীপে। তাই পর্যটনের দিক থেকে ভারতের উপর অনেকটা নির্ভরশীল মালদ্বীপ, এটা মোটামুটি পরিষ্কার। সেই কারণেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হলে যে তার প্রভাব পড়বে সেই দেশের অর্থনীতির উপর, তাও স্পষ্ট।
এছাড়াও মালদ্বীপ যেহেতু একাধিক দ্বীপপুঞ্জের একটি দেশ, তাই সেই দেশ নানাভাবে অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের উপর নির্ভরশীল। ভারতের কাছেও অনেক বিষয়ে নির্ভরশীল এই দ্বীপদেশ। কারণ, ভারত থেকে অনেক খাবার সামগ্রী মালদ্বীপে রপ্তানি করা হয়। তাই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি হলে যে মালদ্বীপের খাদ্যের ভান্ডারে টান পড়বে, তাও মোটামুটি পরিষ্কার। এদিকে ভারত থেকে পর্যটকরা মুখ ফেরানোয় চীনের দ্বারস্থ হয়েছে মালদ্বীপ। কিন্তু তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সেই দেশের বিশেষজ্ঞরা।
যদিও মালদ্বীপের বিরোধী নেতা ইসমাইলের মতে, ভারত এবং মালদ্বীপের সম্পর্ক দীর্ঘসময় ধরে, অভিজ্ঞ নেতাদের দ্বারা মজবুত হয়েছে। মালদ্বীপে পর্যটকদের নিরিখেও ভারতীয়দের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। তবে ইসমাইল মনে করেন, শুধু অর্থনৈতিক বা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নয়, সামাজিক উন্নতি-সহ একাধিক ক্ষেত্রে মালদ্বীপ ও ভারতের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। মালদ্বীপের বিভিন্ন বিপর্যয়ের সময়ে ভারতই পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই সম্পর্ক কতদিন ঠিক থাকবে, তা সময়ই বলবে।