শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অদূর অতীতে অনেক দুর্নীতি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তবে এর মাঝেও শিক্ষক বা শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। যদিও এখন শিক্ষকতার চাকরি পাওয়া মুখের কথা নয়। কারণ আজকাল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে হলে তার আগে প্রশিক্ষণমূলক কোর্স করা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকা হওয়ার জন্য ডি.এল.এড কোর্স করতে হয়। এছাড়া, উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষিকা হওয়ার জন্য বি.এড কোর্স করতে হয়। তবে এর মধ্যে যেকোনো একটি কোর্স করে যেকোনো একটি আর এখানেই দানা বাঁধে বিতর্ক। এই বিতর্কের মাঝেই এবার নতুন সমস্যায় পড়তে চলেছেন চাকরি প্রার্থীরা।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক প্রক্রিয়াকে ঘিরে নানা দুর্নীতি হয়েছে। আর সেই দুর্নীতি সামনে আসতেই সেগুলি গড়িয়েছে আদালতের কাঠগড়া অবধি। এই মুহূর্তে, কলকাতা হাইকোর্টে এই শিক্ষক নিয়োগ মামলা বিচারাধীন। দীর্ঘদিন ধরেই এই মামলার শুনানি চলছে রাজ্যের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে। সেখানেই ৫৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য লড়ছেন চাকরি প্রার্থীরা। যদিও এই মামলায় চাকরি প্রার্থীদের এখনো অবধি কোনো আশানুরূপ সংবাদ দিতে পারেনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের বেঞ্চ। আর এই পরিস্থিতির মাঝেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সমস্যা বাড়লো চাকরি প্রার্থীদের।
২০১৬ সালের টেট পরীক্ষায় নিয়োগের বিষয়ে একটি মামলা চলছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলার শুনানি শুনছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ। এই মর্মে, শুরুতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ এই বছরের টেট পরীক্ষার সম্পুর্ন প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দেয় পর্ষদকে। যদিও পরবর্তীতে এই মামলায় পর্ষদ ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির আবেদন জানায়। সেইমতো বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ এই প্যানেল প্রকাশের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়।
আর হাইকোর্টে এই স্থগিতাদেশ শোনার পরেই আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সুপ্রিম কোর্টেও এই মামলার শুনানি হয় ডিভিশন বেঞ্চে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবিং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইঞার ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি শোনে। আর সবটা শুনে এবার সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় যে হাইকোর্ট আর এই মামলার কোনো শুনানি শুনবে না। আর সুপ্রিম কোর্টের এমন নির্দেশেও যে কোনো আসার আলো দেখতে পাচ্ছেন না চাকরি প্রার্থীরা, তা মোটামুটি নিশ্চিত।