গরু পাচার কাণ্ড নিয়ে বছরখানেক আগে থেকেই তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। কোটি কোটির দুর্নীতি হয়েছে এই কাণ্ডে। সেই টাকায় নাকি ফুলে ফেঁপে উঠেছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ চোরা চালান চক্র থেকে নগদে প্রাপ্ত প্রায় ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা গচ্ছিত রাখা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডল, তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডল ও তাঁদের বিভিন্ন সংস্থার একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে, তদন্তে এমনটাই উঠে এসেছে। তদন্তে এও সামনে এসেছে যে, গরু পাচারকারীদের দেওয়া ঘুষের টাকায় প্রায় ৪৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বানিয়েছিলেন বীরভূমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা।
আর এইসব ঘটনার তদন্তভার দ্বা হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সি সিবিআইকে। সিবিআই তদন্ত শুরু করতেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। তারপরেই গ্রেপ্তার ককরে হয় তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলকে। একইসঙ্গে তাকে জেরা করে তার ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করে সিবিআই। সময় ক্রমে গ্রেপ্তার করা হয় তার মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও। আর এই মামলায় বাবা ও মেয়ে দু’জনেই এখন জেলবন্দি৷ তাদের ঠাঁই হয়েছে দিল্লির তিহার জেলে৷ যদিও একাধিকবার তাদের জামিনের আর্জি জানানো হলেও তা খারিজ করে দেয় আদালত। মামলার তদন্ত সম্পূর্ন না হওয়ার পাশাপাশি অনুব্রতর মতো নেতা প্রমান লোপাট করতে পারে হলে অভিযোগ জানায় সিবিআইয়ের আইনজীবী।
আর এবার এই মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট তৈরির পথে সিবিআই। জানা গেছে, মামলার তদন্ত শেষের মুখে। এর আগেও চারটি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিবার তদন্ত অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তবে এবার সেই তদন্ত সম্পুর্ন করেছে সিবিআই, এমনটাই জানা গেছে সূত্র মারফত। আর এই তদন্ত সম্পূর্ন হওয়ার পরই অনুব্রত মন্ডলকে সমস্ত নথি সমেত এক লক্ষ পাতার একটি নথির গুচ্ছ পাঠিয়েছে সিবিআই। তবে শুধুমাত্র অনুব্রত নয়, তার অঙ্গে এই মামলায় জড়িত সবাইকেই এই নথি পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, চলতি বছরেই এই গরু পাচার মামলার নিষ্পত্তি চায় সিবিআই। এই ইঙ্গিত একাধিক ঘটনায় দিয়েছে তারা। এই মর্মে গত ২২ জানুয়ারি সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা কেন্দ্রের অতিরিক্ত জেনারেল এসভি রাজু বলেন যে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত শেষ করেছে সিবিআই। একইসঙ্গে তিনি বলেন যে শীঘ্রই সম্পূর্ন চার্জশিট জমা দিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উল্লেখ করা হয়েছে যে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে। বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং পঙ্কজ মিথলের বেঞ্চ ওই নির্দেশ দেয়।