২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়দানের পর থেকেই শুরু হয় মন্দির নির্মাণের কাজ। বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে অযোধ্যার রাম মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হলেন ভগবান শ্রী রাম। রামলালার রূপেই মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থান পেলেন ভগবান। সোমবার নানা উপাচারের মাধ্যমে রামলালার মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার ঠিক বেলা ১২টা বেজে ২৯ মিনিট ৩ সেকেন্ডে ‘অভিজিৎ মুহূর্ত’ শুরু হয়। এই পবিত্র সময় স্থায়ী হয় বেলা ১২টা বেজে ৩০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড পর্যন্ত। তার মধ্যেই রামলালার বিগ্রহে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে মন্দির উদ্বোধনের ২০ দিন আগে চূড়ান্ত হয়ে যায় অযোধ্যার রাম মন্দিরে শ্রীরামচন্দ্রের বিগ্রহটি। এর আগে দেশের তিন ভাস্করকে রামলালার মূর্তি নির্মাণের জন্য বলা হয়েছিল। সেই তিন ধরনের মূর্তির মধ্যে বাছাই করা হয় একটিকে। আর তা বেছে নেয় শ্রীরামজন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্ট। জানা গিয়েছে, শ্রীরামচন্দ্রের বাল্য অবস্থাকে কল্পনা করে এই মূর্তি তৈরি হয়েছে। এই মূর্তিটি নির্মাণ করেছেন কর্ণাটকের বিখ্যাত ভাস্কর্য শিল্পী অরুণ যোগীরাজ। অরুণ যোগীরাজের গড়ে তোলা ৫১ ইঞ্চির রামলালার মূর্তি দেখে মোহিত হয়েছেন শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্যরা। প্রথমবার দেখাতেই মূর্তিটি পছন্দ করে ফেলেন অধিকাংশ সদস্য। এরপর ভোট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় সেটি।
কিন্তু তখন প্রশ্ন হল রামলালার বাকি দুটি মূর্তি কোথায়? সেই মূর্তিগুলি কোথায় ঠাঁই পাবে? মূল মন্দিরে নাকি অন্য কোনো মন্দির নির্মাণ করে রাখা হবে সেগুলিকে? এই প্রশ্নগুলি এখন অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে। জানা গেছে, অরুণ যোগীরাজের মূর্তি ছাড়াও আরেকটি মূর্তি বানিয়েছেন রাজস্থানের শিল্পী সত্যনারায়ন। রাজস্থানের শ্বেত মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে এই দ্বিতীয় মূর্তিটি। এই মূর্তির একটি ছবি সামনে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে রামলালার অবয়ব বছর পাঁচেকের এক শিশুর মতোই। তার হাতে রয়েছে সোনার তির ও ধনুক। এই মূর্তির পাশেও খোদাই করা রয়েছে ভগবান বিষ্ণুর দশ অবতারকে।
এটি ছাড়াও রামলালার তৃতীয় মূর্তিটিও একই রকমের। জানা গেছে, এই তিনটি মূর্তিকেই রাখা হবে রামলালার মূল মন্দিরে। রাম জন্মভূমি ট্রাস্ট সূত্রে খবর, মন্দিরের দ্বিতীয় তলে স্থান পাবে রামলালার এই শ্বেত মার্বেলের তৈরি মূর্তিটি। এছাড়াও তৃতীয় যে মূর্তিটি রয়েছে, সেটি স্থান পাবে মূল মন্দিরের তৃতীয় তলে। এছাড়াও, মন্দির নির্মাণের আগে রামচন্দ্রের যে মূর্তি পুজো হত, সেই ছোট মুর্তিটিকে গর্ভগৃহেই স্থান দেওয়া হয়েছে। শ্যমশিলা নির্মিত রামলালার মূল মূর্তির সামনেই সেটিকে রাখা হয়েছে। জানা গেছে, এই চারটি মূর্তি নিত্যপূজা পাবেন।