ভেষজ গুনে সমৃদ্ধ আমাদের আশেপাশের গাছগুলির মধ্যে অন্যতম হল তুলসী গাছ। সর্দি, কাশি সহ একাধিক উপসর্গকে নিমেষে সরিয়ে তুলতে পারে তুলসী গাছের পাতার রস। এছাড়াও ও এক রোগের ওষুধ তৈরি করা হয় এই গাছের নানা স্থানের রস থেকে। তবে শুধু ভেষজ গুনই নয়, হিন্দু ধর্মে তুলসী গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। হিন্দু শাস্ত্র মতে ভগবান নারায়ণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এই তুলসী গাছ। মনে করা হয় ভগবান নারায়ণের সান্নিধ্য লাভ করার একমাত্র মাধ্যম হল তুলসী গাছ। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে তুলসী গাছ।
তবে তুলসী গাছ একরকমের হয়না। আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরণের তুলসী গাছ দেখা যায়। তার মধ্যে রাম তুলসী ও কৃষ্ণ তুলসী হল আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশে থাকা সবথেকে পরিচিত দুটি গাছ। তবে এই দুটি ছাড়াও তুলসী গাছের আরো একটি প্রকারভেদ রয়েছে, যার মধ্যেও পাওয়া যায় আশ্চর্যকর কিছু গুনাগুন। আর এটি হল মিষ্টি তুলসীর গাছ। এই গাছকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় স্টেভিয়া গাছ বলা হয়। এটি মূলত তুলসী গাছের শ্ৰেণীভুক্ত একটি গাছ। সাধারণ মানুষের মধ্যে এটি মিষ্টি তুলসী নামেই বেশি পরিচিত। তবে এর গুনাগুন শুনলে অবাক হবেন আপনিও।
উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে, এই তুলসীর নাম মিষ্টি তুলসী হওয়ার পিছনে রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এর সেটি হল এই গাছের মিষ্টতা। এই গাছের পাতা প্রবলভাবে মিষ্টি। বিজ্ঞানীদের মতে, এই স্টেভিয়া গাছের পাতা চিনির তুলনায় ৩০০ শতাংশ বেশি মিষ্টি। সেই কারণেই কেউ যদি এই গাছের পাতা চিবিয়ে খান, তাহলে তিনি তেতো স্বাদ পাবেন মুখের মধ্যে। তার নেপথ্যের রয়েছে বৈজ্ঞানিক যুক্তি। কারণ, অতিরিক্ত মিষ্টিকে আমাদের জিভে অবস্থিত স্বাদকোরকগুলি তেতো বলে চিহ্নিত করে।
তবে এই স্টেভিয়া গাছের পাতা অতিরিক্ত মিষ্টি হলেও এর গুনাগুন রয়েছে ঝুড়ি ঝুড়ি। চিনির থেকে বেশি মিষ্টি হলেও এই গাছের পাতায় ক্ষতিকারক শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট নেই। আর যেহেতু খাওয়ার সময় অল্প তেতো স্বাদ অনুভূত হয়, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই স্টেভিয়া গাছের পাতা সেবন একটি দুর্দান্ত টোটকা হতে পারে। তবে এই গাছ মূলত উত্তর ভারতে পাওয়া যায়। কিন্তু তা হলেও এখন অনেকভাবে স্টেভিয়া গাছের পাতার রস বাজারে পাওয়া যায়। আর বাজারে বিক্রীত এই ধরণের রস খেলেও উপকার পেতে পারেন ডায়াবেটিস রোগীরা।
Disclaimer: প্রতিবেদনটি তথ্যের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। যেকোনো শারীরিক অসুস্থতায় আগে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।