বাংলায় ইতিমধ্যে শেষের মুখে বসন্তকাল। তাই গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় এখন বেশ খানিকটা বদলেছে প্রকৃতির রূপ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পারদের অঙ্কটা। রীতিমতো গ্রীষ্মের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বসন্তের মাঝেই। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি। চৈত্র মাসেই চল্লিশ ডিগ্রির গন্ডি পেরিয়ে গিয়েছে একাধিক জেলার তাপমাত্রা। আর আগামী কয়েকমাস দেশজুড়ে এমনই তাপপ্রবাহ চলতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে দেশের মৌসম ভবন। আর এই প্রবল গ্রীষ্মের প্রভাব পড়তে চলেছে আমাদের রোজকার জীবনযাত্রার উপর। সেই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর।
যদিও বিগত কয়েক মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি যেন গোটা দেশে এক চরম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। মশলাপাতি থেকে সবজি, মাছ-মাংস, চাল ও ডাল- সবকিছুর দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বলা বাহুল্য, খুব অল্প সময়ে বেশি হারে ঘটেছে এই মূল্যবৃদ্ধি। শীতের শুরুতেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ছবিটা ধরা পড়েছে আমাদের রাজ্যেও। একইসঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে দিনের পর দিন। আর এই সবকিছু মিলিয়ে যেন খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল মধ্যবিত্তদের কাছে।
আর এবার এই চ্যালেঞ্জ আরো কঠিন হতে চলেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই মর্মে শুরু হয়েছিল মনিটরি পলিসি কমিটির বৈঠক। এই বৈঠক সম্প্রতি শেষ হয়েছে। আর বৈঠক শেষ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “এই বছরে গ্রীষ্মকালে শাকসবজির দামের হেরফেরের ওপর নাজর রাখতে হবে আমাদের।” অর্থাৎ এবছর যে গ্রীষ্মের কারণে সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, তা অনেকটা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। সেই কারণেই বাজারে মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটতেই পারে আগামী দিনে।
এই প্রবল গ্রীষ্মে সবজি চাষের ক্ষতি হলেও এর প্রভাব সেভাবে গমের চাষের উপর পড়বে না বলে জানিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “গমের ফলন নিয়ে এত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সবজির দামের দিকে নজর রাখতে হবে। এবং তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির কারণে অন্য যেসব ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে, তার ওপরেও নজর রাখতে হবে আমাদের।” তাহলে কি শুধুই সবজির দাম বাড়বে গ্রীষ্মে? এই প্রশ্নের উত্তরে আরবিআই গভর্নর বলেন, “বিশেষ করে খাদ্য শস্যের ওপরে আবহাওয়া কী প্রভাব ফেলে, তা আমাদের নজরে রাখতে হবে। বিশেষ করে কিছু কিছু শাকসবজির দামে নজর রাখতে হবে আমাদের।”