দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সেমিস্টার ব্যবস্থা চালুর জল্পনা চলছিল। কিন্তু যখন চালু হবে সেই নিয়ে জলঘোলা হচ্ছিল। তবে পর্ষদের তরফে মার্চ মাসে ঘোষণা করা হয় যে, এবার থেকে পড়ুয়ার জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা অর্থাৎ এবার উচ্চমাধ্যমিকেও চালু হচ্ছে সেমেস্টার পদ্ধতি। ২০২৬ সাল থেকেই একটি ফাইনাল নয়, বরং দুটি সেমেস্টারে হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। অর্থাৎ এখন যেমন একেবারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হয়, সেটা আর হবে না। বরং জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষাকে দুটি ভাগে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। কলেজের ধাঁচেই সেমেস্টার চালু করতে করছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
যেসব পড়ুয়ারা ২০২৪ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে এবং একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবেন, তারাই এই নয়া ধাঁচে পরীক্ষা দেবে। একাদশ শ্রেণিতে দুটি সেমেস্টারে পরীক্ষা দেবে ওই পড়ুয়ারা। একইভাবে উচ্চমাধ্যমিকের সময়ও দুটি সেমেস্টারে ভেঙে পরীক্ষা হবে। যার মধ্যে একটি সেমেস্টার হবে নভেম্বরে। এই সেমিস্টারে শুধুমাত্র ‘মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন’ বা এসসিকিউ প্রশ্ন আসবে। ওএমআর শিটে উত্তর দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। দ্বিতীয় সেমেস্টার হবে মার্চে। দ্বিতীয় সেমেস্টারে সব ধরনের প্রশ্ন থাকবে। অর্থাৎ ছোট প্রশ্ন যেমন থাকবে, তেমন বড় প্রশ্নও থাকবে।
এছাড়াও এবার থেকে উচ্চমাধ্যমিকের সিলেবাসেও বেশ কিছু পরিবর্তন করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। দীর্ঘ ১১ বছর পর বদলে আনা হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ৪৯টি বিষয়ের সিলেবাসে। একইসঙ্গে এবছর থেকে ৬০-এর পরিবর্তে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় এখন মোট বিষয় হবে ৬২ টি। এর মধ্যে ১৩ টি ভোকেশনাল বিষয় আছে। জানা গেছে, বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের সিলেবাসে বেশ কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ইতিহাসের সিলেবাসেও হচ্ছে রদবদল।
তবে শুধুমাত্র এসব পরিবর্তন নয়, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে এবার থেকে পার্সেন্টেজের বদলে পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হবে পার্সনটাইল। কিন্তু কি এই পার্সনটাইল? এটি হল এক ধরণের নম্বর। উদাহরণস্বরূপ, যে পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বর পাবেন তাকে দেওয়া দেওয়া হবে ১০০ পার্সনটাইল। অন্যদিকে, তার থেকে কম নম্বরপ্রাপ্ত পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে এই পার্সনটাইল হবে আলাদা। এটি এমনই একটি ইউনিক নম্বর হবে, যার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা মেরিট লিস্টে নিজেদের স্থানও খুঁজে পাবেন। তাই গ্রেড বা পার্সেন্টেজ নিয়ে আর ঝামেলা থাকছে না।