রাজ্যের নানা ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে অন্যতম হল বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর। এটিকে প্রাচীন নগরী বললেও খব একটা ভুল হবেনা। কারণ প্রাচীনকালে তৈরি নগরের নানা চিহ্ন এখনো রয়ে গেছে বিষ্ণুপুরে মাটিতে। মল্ল রাজাদের কীর্তি এখনো বিদ্যমান বাঁকুড়া জেলার এই শহরে। সেই কারণেই লালমাটির দেশের এই প্রাচীন নগরী রাজ্যের পর্যটন স্থলগুলির মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করে। প্রতি বছর রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে, এমনকি দেশবিদেশের নানা প্রান্ত থেকেও হাজার হাজার পর্যটক এই শহরে ভিড় জমান। বলা যায়, রাজ্যের পর্যটন শিল্পের মধ্যে বিষ্ণুপুর একটি উল্লেখযোগ্য নাম।
বিষ্ণুপুর শহরে একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। মূলত টেরাকোটা নির্মিত বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির এখনো রয়েছে শহরে। যেমন রাসমঞ্চ, জোড় বাংলো, শ্যমরায় মন্দির, মদনমোহন মন্দির, লালজিউ মন্দির, গড় দরজা, জোড়া মন্দির এখানে বেশ উল্লেখযোগ্য স্থান। তবে বিষ্ণুপুরে বাইরেও রয়েছে এমন কিছু স্থান, যা না দেখলে আপনার হয়তো বাংলার একাংশকে দেখাই হবেনা। কারণ বিষ্ণুপুর থেকে সামনেই রয়েছে জয়রামবাটি, যেখানে মা সারদার জন্ম হয়। এছাড়াও হুগলি জেলায় রয়েছে রামকৃষ্ণদেবের জন্মস্থান কামারপুকুর ও তারকেশ্বর। তাই বিষ্ণুপুরের ট্যুর করলে অনেকেই এইসব জায়গাগুলিকে জুড়ে নের তালিকায়।
তবে বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি বা কামারপুকুর বা তারকেশ্বর যাওয়ার জন্য একমাত্র সড়কপথ উপলব্ধ। আর সড়কপথে অনেকটা সময় বেশি খরচ হয়ে যায়। সেই কারণেই বিষ্ণুপুর ও তারকেশ্বর রেলপথ চালুর দাবি উঠে আসছে অনেকদিন ধরেই। আর সম্প্রতি, যখন ভারতীয় রেল একাধিক নতুন রুটের কাজ শুরু করেছে, তাই এই রেল রুট এবার চালু হতে পারে বলে বাড়ছে সম্ভাবনা। তবে এখনো এই রুটে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কিছু জট রয়ে গেছে। সেই বিষয়টিকে তাড়াতাড়ি সমাধান করে রেল শীঘ্রই এই রেল রুট চালু করতে পারে বলে খবর।
জানা গেছে, তারকেশ্বর তর্কে বিষ্ণুপুর অবধি এই রেল রুটে হুগলির কামারপুকুর সহ বেশ কিছু স্টপেজ তৈরি হবে। একইসঙ্গে বাঁকুড়ার জয়রামবাটি, বড়গোপীনাথপুর, ময়নাপুর এবং গোকুলনগর- জয়পুর স্টপেজ তৈরির প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এই রুটকে গোঘাট রুটের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে গোঘাট ও তারকেশ্বর হয়ে হাওড়া থেকে ইএমইউ ট্রেনে বিষ্ণুপুর পৌঁছানো যাবে প্রায় ৩ ঘন্টায়। এক্ষেত্রে ভাড়া অনেকটা কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হাওড়া থেকে ইএমইউ ট্রেনে বিষ্ণুপুর পৌঁছাতে ৩০ টাকার কাছাকাছি ভাড়া গুনতে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাস রুটের থেকে যেমন সময় কম লাগবে ট্রেনে, তেমন ভাড়াও হবে কম।