ভগবান রামের জন্মভূমি অযোধ্যায় এখন সাজো সাজো রব। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের আর খুব বেশি দেরি নেই। আগামী ২২ জানুয়ারি হবে রামলালার অভিষেক অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যে, রামলালার ভব্য মূর্তি স্থান পেয়েছে বিশাল এই মন্দিরের গর্ভগৃহে। সেই ছবি ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এছাড়াও গত কয়েকদিন আগে থেকেই রামলালার দ্বাদশ অধিবাস শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে, সেই রীতির সিংহভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে, অযোধ্যায় ভিড় জমিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। তাদের মধ্যে কেউ গিয়েছেন কাজে, কেউ আমন্ত্রিত হয়ে, কেউ আবার ভগবান রামের টানেই পৌঁছে গিয়েছেন রাম রাজ্য অযোধ্যায়।
কিন্তু কেন ২২ শে জানুয়ারি দিনটিকে বেছে নেওয়া হল মন্দিরের উদ্বোধনের জন্য? এর পিছনে রয়েছে এক পৌরাণিক কারণ। পুরাণ অনুযায়ী, ভগবান শ্রীরামের জন্ম হয়েছিল অভিজিৎ মুহূর্ত, মৃগশীর্ষ নক্ষত্র, অমৃত সিদ্ধি যোগ এবং সর্বর্থ সিদ্ধি যোগের সঙ্গমকালে। আর সেই শুভক্ষণ তৈরি হচ্ছে আগামী ২২ জানুয়ারি। সেই কারণেই মূলত এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে মন্দিরের দ্বারদঘাটনের শুভক্ষন হিসেবে। বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, অভিজিৎ মুহূর্ত হল দিনের সবচেয়ে শুভ এবং শক্তিশালী সময়। যা ৪৮ মিনিট থাকবে। এর মধ্যে পবিত্রতম হল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের মধ্যে ১৫ মিনিটের অষ্টম মুহূর্তটি। ২২ তারিখ অভিজিৎ মুহূর্ত শুরু হচ্ছে বেলা ১২টা বেজে ১৬ মিনিটে। শেষ হবে ১২টা ৫৯ মিনিটে।
এছাড়াও শিব পুরানে উল্লিখিত তথ্যানুযায়ী, এই মাহেন্দ্রক্ষণেই ত্রিপুরাসুরকে বধ করেছিলেন ভবগান শিব। অর্থাৎ হিন্দু মতে, এই সময়ে দুষ্টের দমন হয়। অশুভ শক্তির নাশ হয়। ফলে এই ক্ষণ অতি শুভ বলেই মনে করা হয়। শাস্ত্র মতে, কৌশল্যার সন্তান শ্রীরামও এই সময়ই জন্ম নিয়েছিলেন। ২২ জানুয়ারি মৃগশীর্ষ নক্ষত্রের তিথি শুরু হবে ভোর ৩টে ৫২ মিনিটে। থাকবে সকাল ৭.১৩ মিনিট পর্যন্ত। অন্যদিকে, অমৃত সিদ্ধি যোগ এবং সর্বথ সিদ্ধি যোগ শুরু সকাল সোমবার সকাল ৭টা ১৩ মিনিটে। থাকবে মঙ্গলবার ভোর ৪.৫৮টা পর্যন্ত। তাই এই দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। আর এই কারণেই এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে মন্দিরের উদ্বোধনের দিন হিসেবে।
আর এই দিনে বিশেষ একটি কাজ করলেই ভগবান রামের কৃপালাভ ঘটবে। আর সেই কাজটি হল শ্রীসূক্ত মন্ত্রপাঠ। ওইদিন সকাল ৬ টা ২২ মিনিট থেকে সন্ধ্যে ৫টা ১৭ মিনিটের মধ্যে অন্তত ১০৮ বার সম্পন্ন করতে হবে এই মন্ত্রপাঠ। এখন একনজরে দেখে নিন সেই বিশেষ মন্ত্রটি।
ওম হিরণ্যবর্ণাং হরিণীং, সুবর্ণরজতস্ত্রজাম্।
চন্দ্রাং হিরণ্ময়ীং লক্ষ্মী, জাতবেদো ম আ বহ।।
তাং ম আ বহ জাতবেদো, লক্ষ্মীমনপগামিনীম্।
যস্যাং হিরণ্যং বিন্দেয়ং, গামশ্বং পুরুষানম্।।
অশ্বপূর্বা রথমধ্যাং, হস্তিনাদপ্রমোদিনীম্।
শ্রিয়ং দেবীমুপ হ্বয়ে, শ্রীর্মা দেবী জুষতাম্।।
কাং সোস্মিতাং হিরণ্যপ্রাকারামার্দ্রাং জ্বলন্তীং তৃপ্তাং তর্পয়ন্তীম্।
পদ্মেস্থিতাং পদ্মবর্ণাং তামিহোপ হ্বয়ে শ্রিয়ম্।।
চন্দ্রাং প্রভাসাং যশসা জ্বলন্তীং শ্রিয়ং লোকে দেবজুষ্টামুদারাম্।
তাং পদ্মিনীমীং শরণং প্র পদ্যে অলক্ষ্মীর্মে নশ্যতাং ত্বাং বৃণে।।
আদিত্যবর্ণে তপসোধি জাতো বনস্পতিস্তব বৃক্ষোক্ষ বিল্বঃ।
তস্য ফলানি তপসা নুদন্তু যা অন্তরা যাশ্চ বাহ্যা অলক্ষ্মীঃ।।
উপৈতু মাং দৈবসখঃ, কীর্তিশ্চ মণিনা সহ।
প্রাদুর্ভূতোস্মি রাষ্ট্রেস্মিন্, কীর্তিমৃদ্ধিং দদাতু মে।।
ক্ষুত্পিপাসামলাং জ্যেষ্ঠামলক্ষ্মীং নাশয়াম্যহম্।
অভূতিমসমৃদ্ধিং চ, সর্বাং নির্পুদ মে গৃহাৎ।।
গন্ধদ্বারাং দুরাধর্ষা, নিত্যপুষ্টাং করীষিণীম্।
ঈশ্বরীং সর্বভূতানাং, তামিহোপ হ্বয়ে শ্রিয়ম্।।
মনসঃ কামমাকূতিং, বাচঃ সত্যমশীমহি।
পশূনাং রূপমন্নস্য, ময়ি শ্রীঃ শ্রয়তাং যশঃ।।
কর্দমনে প্রজা ভূতা ময়ি সম্ভব কর্দম।
শ্রিয়ং বাসয় মে কুলে মাতরং পদ্মমালিনীম্।।
আপঃ সৃজন্তু স্নিগ্ধানি চিক্লীৎ বস মে গৃহে।
নি চ দেবীং মাতরং শ্রিয়ং বাসয় মে কুলে।।
আর্দ্রাং পুষ্করিণীং পুষ্টিং পিঙ্গলাং পদ্মমালিনীম্।
চন্দ্রাং হিরণ্যয়ীং লক্ষ্মী, জাতবেদো ম আ বহ।।
আর্দ্রাং য করিণীং যষ্টিং সুবর্ণাং হেমমালিনীম্।
সূর্যাং হিরণ্যময়ীং লক্ষ্মী জাতবেদো ম আ বহ।।
তাং মা আ বহ জাতবেদো লক্ষ্মীমনপগামিনীম্।
যস্যা হিরণ্যং প্রভূতং গাবো, দাস্যোশ্বান্ বিন্দয়ং পুরুষানহম্।।
যঃ শূচিঃ প্রয়তো ভূত্বা জুহুযাদাজ্যমন্বহম্।
সূক্তং পঞ্চদশর্চং চ শ্রীকামঃ সততং জপেৎ।।